ভারতের জনপ্রিয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত, যার অভিনয় করা ছবি ‘ছিছোড়’ ছিল আত্মহত্যার বিরোধী ছবি। কিন্তু সম্প্রতি তিনি নিজেই আত্মহত্যা করে মারা যান। আর তার মারা যাওয়ার কারন ছিল ডিপ্রেশন। ভক্তমহল ও তার শুভাঙ্কাখিদের মতে ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ফেভারিটিজম, নেপোটিজম, স্বজনপোষণ এর কারনেই রাজপুতের মৃত্যু।
রাজপুত মারা যাওয়ার পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মুখ খুলেছে অনে গুণী অভিনয় শিল্পীরা। ফুসে উঠেছে অনেকেই। অনেক অভিনেত্রী মুখ খুলেছেন তাদের সাথে ঘটে যাওয়া সব বিষয় নিয়ে। তাদের মধ্যে রয়েছেন শ্রী লেখা, গায়িকা মোনালি ঠাকুর, কঙ্গনা রানাওয়াত, দেবলীনা দত্ত সহ আরোও অনেকেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই সকল সমস্যা কি শুধু মাত্র ফিল্ম ইন্ড্রাস্টিতেই সীমাবদ্ধ? শুধুমাত্র কি ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই ফেভারিটিজম, নেপোটিজম, স্বজনপোষণ দেখা যায়?
এর উওর আমাদের সবারই জানা, কিন্তু তারপরও মুখ খুলে বলার সাহস করি না। অপ্রিয় হলেও সত্যি এটাই যে শুধুমাত্র ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই ফেভারিটিজম, নেপোটিজম, স্বজনপোষণ দেখা যায় না, আমাদের দেশেও এমটাই হচ্ছে। আর আমাদের দেশের শুধুমাত্র মিডিয়াতেই নয় প্রত্যেকটি সেক্টরেই দেখা যায় ফেভারিটিজম, নেপোটিজম, স্বজনপোষণ তার সাথে নারীদের জন্য রয়েছে আরোও একটি বিশেষ অপশন(বসের সাথে সময় কাটানো)।
এবার নিজের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা বলি তাহলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার ভাবে হয়ত প্রকাশ করতে পারব। আমি এই রঙিন শহরে বড় হইনি, এই শহরের আধুনিকতার সাথে আমি একেবারেই অপরিচিত। আমার বেড়ে উঠা অজোপাড়া একটি গ্রামে, পড়াশোনা ও গ্রামেই করেছি। ছোটবেলা থেকেই টুকটাক লিখালিখির শখ থেকে সেটাকেই পেশা হিসেবে নেয়ার ঝোঁক মাথায় চেপে বসে। পারিবারিক কারনে অর্নাস প্রথম র্বষে থাকা কালীন এই রঙিন শহরে আসা, সেই সুযোগেই র্ভতি হয়ে গেলাম নিউজ প্রেজেন্টেশন র্কোসে, যেহেতু আমি জানতাম না যে কিভাবে কোন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আমি সফল হতে পারব সেহেতু প্রথমে পরিচিত কিছু মানুষের পরার্মশ নিয়েই শুরু করি। বলে রাখা ভালো যে আমার কোন মামা-খালা, পরিচিত কোন এমপি মন্ত্রী, কিংবা কোন পরিচিত কমিশনার নেই যে আমাকে সাহায্য করবে।
যাই হোক র্কোস শেষে জবের জন্য এপ্লাই করা শুরু করলাম, কোথাও কিছু হচ্ছিল না, প্রশিক্ষন চলা কালিন এক সাংবাদিকের সাথে পরিচয় হয়, বলে রাখা ভালো আমি ওনার মেয়ের বয়সী হব। ওনি আমাকে একটা পত্রিকায় রেফার করলেন জবের জন্য, কাজ না পাড়া সত্ত্বেও আমার জবটা হয়ে গেল, এক মাসের মধ্যে আমি সব কাজ শিখে নিয়েছিলাম। তারপড় ও দেখতে পেলাম বাপের বয়সী লোকের আসল রূপ। সে আমাকে কু-প্রস্তাব দেয়, আমি যখন তার প্রস্তাবে রাজি হলাম না তখন সে আমাকে বলেছিল তুমি কখনো টিকে থাকতে পারবা না, টিকে থাকার জন্য সিঁড়ি দরকার আর সিড়িঁ এমনে এমনে পাওয়া যায় না। তার সপ্তাহ খানেক পড় বিনা নোটিশে আমাকে জব থেকে ছাটাই করে দেয়া হয়। তখন একটা জিনিস বুঝতে বাকি রইল না যে টিকে থাকার লড়াইয়ে যোগ্যতার চেয়ে মামা-খালু থাকাটা বেশি জরুরী। প্রত্যেকটি জায়গায় এভাবেই চলছে, ফেভারিটিজম, নেপোটিজম ও স্বজনপ্রীতি।
এত উন্নত হচ্ছি আমরা অথচ আমাদের মানসিকতা আজ কোথায়? আমরা কি কোথাও নিরাপদ? আমরা কি চাইলে পারি না সুস্থ মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলতে?
কিন্তু তার মধ্যেও কিছু জায়গায় যোগ্যতার কদর করা হয়, কিন্তু এই অল্প সংখ্যক জায়গা কি যথেষ্ট?
আগামীনিউজ/জেএস