Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাতের পর মাশরাফির শিকার চিবাবা


আগামী নিউজ | ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২০, ০৬:২৬ পিএম
সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাতের পর মাশরাফির শিকার চিবাবা

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর উইকেট পেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: সংগৃহীত।

ঢাকা: ব্যাট হাতে মাত্র ১৫ বলে ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংসের পর বল হাতে কারিশমা দেখাচ্ছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। নিজের প্রথম ও চতুর্থ ওভারে জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট তুলে নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। তারপরই আঘাত হেনেছে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি অধিনায়ক চামু চিবাবাকে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। পরে ব্রেন্ডন টেলরকে (৮) বোল্ড করে ফিরিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ফলে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ৩২১ রানের পাহাড় টপকাতে নেমে বিপদে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় দলটি ১৩.২ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৪ রান তুলেছে।  মাদুভেরেরা ১৩ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।

আগে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটির সুবাদে ৬ উইকেটে ৩২১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৩২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্কোর বোর্ডে ১ রান জমা হতেই ১ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ওপেনার থিনাসে কামুনহুকামওয়েকে সরাসরি বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের ঘরের মাঠ বুলাওয়েতে ৮ উইকেটে  ৩২০ রান করেছিল টাইগাররা। এবার ৩২১ রান করে বেশি করে নতুন রেকর্ড গড়ল মাশরাফী বাহিনী।  

রবিবার (১ মার্চ) দুপুরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতেই আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এ ম্যাচ দিয়ে ফের আন্তজার্তিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করলেন মাশরাফী। বিশ্বকাপের পর শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। 

এদিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। লিটন শুরু থেকেই খানিকটা মেরে খেলার চেষ্টা করলেও তামিম ছিলেন সতর্ক। তামিম-লিটনের ৬০ রানের জুটি ভাঙেন কার্ল মুম্বা।  

কার্ল মুম্বার করা ১২তম ওভারের শেষ বলটি তামিমের প্যাডে আঘাত করলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে জিম্বাবুয়ের ফিল্ডাররা। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় তামিম আউট। কিন্তু রিভিউ নেয়নি জিম্বাবুয়ে। পরে ওভারে অভিষিক্ত মাধবেরের শিকার হন এই ওপেনার। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তামিম। ফেরার আগে  ৪৩ বলে ২৪ রান করেন তিনি।  

তামিমের বিদায়ের পর নতুন সঙ্গী নাজমুল হাসান শান্তকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের লড়াই শুরু করেন লিটন দাস। এই ওপেনার তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। ১৯.১ ওভারে স্কোর বোর্ডে শত রান জমা করে বাংলাদেশ। টিরিপানোর বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলীয় সেঞ্চুরি করেন লিটন। 

নাজমুল শান্তকে নিয়ে যখন সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছেন ঠিক তখনই নিজেদের দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুতুমবোজির বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরার আগে ৩৮ বলে ১টি চার আর ২ ছক্কায় ২৯ রান করেন শান্ত। লিটনের নতুন সঙ্গী মুশফিকুর রহিম। 

মুশফিকের সাথে জুটি গড়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন দাস। ডোনাল্ড টিরিপানোর ছোঁড়া ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুিুরি পুর্ণ করেন এই ওপেনার। 

২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক ঘটে লিটন দাসের। তিন বছরেরও বেশি সময় পর ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান এই ওপেনরা। তারও প্রায় দেড় বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এল দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি।  

লিটন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পরই বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। ডোনাল্ড টিরিপানোর বলে মুতুম্বামির তালুবন্দি হওয়ার আগে ২৬ বলে ১৯ রান করেন তিনি। লিটনের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন মুশফিক। মুশফিকের বিদায়ের পর পেশিতে টান লাগায়  রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যান সেঞ্চুরিয়ান লিটনও। এরপর মাহমুদউল্লাহর সাথে যোগ দেন মোহাম্মদ মিথুন। 

দলীয় ২৭৪ রানের মাথায় ক্রিস্টোফার এমপফুর বলে এলবিডব্লিউ হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফেরার আগে ২৮ বল খেলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রান করেন তিনি। এরপর ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মোহাম্মদ মিথুন। অর্ধ শতক পুর্ণ হতেই সেই এমপফুর শিকার বনে সাজঘরে ফেরেন মিথুন। এরপর ৪ বলে ৭ রান নিয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজও। 

তবে ইনিংসের শেষ দিকে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। তাতেই রান পাহাড়ে উঠে যায় বাংলাদেশ। ৩ ছক্কায়  মাত্র ১৫ বলে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন সাইফ উদ্দিন। অধিনায়ক মাশরাফী মাঠে নামলেও কোনো বল মোকাবেলা করার সুযোগ পাননি তিনি।  

সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফীর সাথে একাদশে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমান। 

এর আগে ৭২বার মুখোমুুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। বিশ্বের যেকোন দলের চেয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বেশি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। ৭২ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৪টিতে জয় পায়। ২৮টিতে জিতেছে জিম্বাবুয়ে।

আগামীনিউজ/রবিউল/জাকিউল

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে