ঢাকা: বাংলাদেশকে ডাকছে ইতিহাস। দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে এই ইতিহাস লিখতে বাংলাদেশের চাই ১৭৮ রান। বাংলাদেশের শুরুটা দারুন হয়েছে। দুই ওপেনার মিলে তুলে ফেলেন ৫০ রান। এরপরই এই জুটি ভাঙেন রবি বিঞ্চু। আউট হয়ে যান তানজিদ (১৭)। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল হাসান জয়ও ভরসা দিতে পারেননি। বিঞ্চুর দুর্দান্ত এক ডেলিভেরিতে বোল্ড হয়ে গেলেন মাত্র ৮ রান করে। এখান থেকে একটা বড় জুটি দরকার ছিল। কিন্তু তৌহিদ হৃদয় সেটা করতে ব্যর্থ হলেন। তিনি বিঞ্চুর বলে এলবিডব্লু হয়ে গেলেন। বিঞ্চুর বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পড হলেন শাহাদত হোসেন (১)। এর আগেই অবশ্য রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ড্রেসিংরুমে গিয়েছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন (২৫)। হঠাৎ করেই চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। সেই চাপ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন শামিম হোসেন (৭) আউট হয়ে। তাঁকে ফিরিয়েছেন মিশ্র। তাঁর বলেই আউট হয়েছেন অভিষেক দাস (৫)। বাংলাদেশের সামনে এখন ঘোর অন্ধকার। ভরসা বলতে অধিনায়ক আকবর আলী। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যাওয়া ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এই মুহূর্তে দুজনের জুটি জমে গিয়েছে। এখন এই জুটিই বাংলাদেশের আশা-ভরসার প্রতীক।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় ২৯.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আকবর আলী ২৬ এবং পারভেজ হোসেন ইমন ৩৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ফাইনালে টসে জিতে বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভারতকে চেপে ধরে বাংলাদেশি বোলাররা। প্রথম ওভারটা মেডেন দিয়েছেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস খ্যাত শরিফুল ইসলাম। সপ্তম ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন অভিষেক দাস। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে দিব্যাংশ সাক্সেনা পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়নি। ৭ বল খেলে ২ রান করেন ভারতীয় ওপেনার।
৯ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর খানিকটা চুপসে যায় ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। এরপর ভারতকে উদ্ধার করে জশোয়াল-তিলক ভার্মার দ্বিতীয় উইকেট জুটি। তারা দুজনে মিলে ৯৪ রান যোগ করেন। ১০৯ রানের মাথায় তিলক ভার্মাকে শরিফুল ইসলামের ক্যাচ বানিয়ে এ জুটি বিচ্ছিন্ন করেন তানজিম হাসান সাকিব। এক ওভারে বাদে ভারতকে বড়সড় ধাক্কা দেন রাকিবুল হাসান। আউট হয়ে যান ভারত অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গ। ১১ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছে ভারত।
সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করা জশোয়ালকে নিয়ে ভয় ছিল বাংলাদেশের। আবার তিনি না সেঞ্চুরি মেরে দেন। তবে ৪০ তম ওভারের পঞ্চম বলে জশোয়ালকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে জশোয়ালের ব্যাট থেকে এসেছে ৮৮ রান। এই রান তিনি করেছেন ১২১ বলে আট চার আর এক ছক্কায়। ওই ওভারের শেষ বলে সিদ্ধেষ ভীরকে শূন্য রানে ফিরিয়েছেন শরিফুল।
এরপর লেজের ব্যাটসম্যানদের মুড়িয়ে দেওয়ার কাজটা করেন অভিষেক দাস। ফলে সবচেয়ে বেশি উইকেটও গেছে তাঁর দখলে। ৯ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৪০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন অভিষেক। ৩১ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেছেন শরিফুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব ও রাকিবুল।
বাংলাদেশ একাদশ : পারভেজ হোসেন ইমন, তানজিদ হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, তৌহিদ হৃদয়, শাহাদাত হোসেন, শামীম হোসেন, আকবর আলী (অধিনায়ক), রকিবুল হাসান, শরীফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও অভিষেক দাস।
ভারত একাদশ : প্রিয়ম গর্গ (অধিনায়ক), যশস্বী জসওয়াল, দিব্যাংশ সাক্সেনা, তিলক ভার্মা, ধ্রুব জুয়েল, সিদ্ধেশ বীর, অথর্ব আঙ্কোলেকার, রবি বিষ্ণু, সুশান্ত মিশ্র, কার্তিক ত্যাগী ও আকাশ সিং।
আগামীনিউজ/রবিউল/জেডআই