Dr. Neem on Daraz
Victory Day

​​​​​​​মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চায় বেজা


আগামী নিউজ | আমির হামজা প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২০, ০৭:৪১ পিএম
​​​​​​​মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ চায় বেজা

মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত আরো ৩৯২ কোটি ১০ লাখ টাকা দ্রুত বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।

বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। গত মার্চ মাসে বেজা প্রথম এ অনুরোধ জানায়, দুই বার চিঠি দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি অর্থ বিভাগ।

গত সপ্তাহে এক চিঠি দিয়ে বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা বিভাগ ও অর্থ বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়ে আবারো এ বরাদ্দ চেয়েছি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বেজার কাছে মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য এক হাজার একর অখণ্ড জমির প্রয়োজন রয়েছে, যা বেজার নেই। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভারতীয় ইকনোমিক জোনের জন্য এ জমির ব্যবস্থা করা হয়। কারণ পৃথিবীর বিখ্যাত কোম্পানিগুলো মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, এ কোম্পানিগুলো হচ্ছে জাপানের সজিত কর্পোরেশন , সৌদি আরবের আল বাওয়ানি গ্রুপ, সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশন, আমিরাত ইকোনমিক জোনসহ আরো অনেক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে জমি বরাদ্দের জন্য আবেদন করেছে। চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে উইলমার ও আদানি গ্রুপ ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করে এখানে যৌথভাবে খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করতে চায় সিঙ্গাপুর ও ভারতের এই দুটি প্রতিষ্ঠান। ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের সম্ভাব্য ডেভেলপারের সঙ্গে নেগোসিয়েশন চলমান রয়েছে এবং অচিরেই এ বিষয়ে নির্বাচিত ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। তাই আলোচ্য প্রকল্পের জন্য যথাসময়ে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে জমি বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরস্থ মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভারতীয় নমনীয় ঋণ ভারতীয় লাইন অফ ক্রেডিট থ্রি (এলওসি থ্রি) এর আওতায় ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন’ শীর্ষক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজও শুরু করা যাবে না।

ফলে ডেভেলাপারে সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে বিলম্বিত হওয়াসহ জোন স্থাপনে দীর্ঘ সূত্রিতার সৃষ্টি হতে পারে। যেহেতু বর্ণিত বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক, সম্পর্ক জড়িত সেহেতু, এ ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করা সমীচীন হবে।

সূত্র জানায়, গত এপিল মাসে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় অনুমোদিত প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরস্থ ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প’ এর বিপরীতে পুনঃবরাদ্দ হিসেবে এ অর্থ চাওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ ২০১৯-২০ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় কল নোটিশে মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৮৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দ রাখা হয় মাত্র ২০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির আওতায় মূলত ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ এর ৮(৪) অনুযায়ী প্রত্যাশী সংস্থা বেজাকর্তৃক সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের নোটিশ জারির ১২০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়। একই আইনের আওতায় উপধারা ১৪ অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য প্রাক্কলিত অর্থ প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থাকর্তৃক ১২০ দিনের মধ্যে জমা দেওয়া না হলে উক্ত মেয়াদ শেষে অধিগ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম বাতিল হবে।

উল্লেখ্য, ভূমি অধিগ্রহণের আওতায় নির্ধারিত ভূমি অধিগ্রহণের কেসভিত্তিক প্রাক্কলিত অর্থ আংশিক পরিশোধের কোনো সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরস্থ মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য এলওসি-৩ এর আওতায় ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন’ শীর্ষক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি গত ৯ এপ্রিল একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। উক্ত অনুমোদিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করার জন্য ‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করতে হবে। এ অবস্থায় মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন সরকারের অগ্রাধিকার এবং বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ অঙ্গীকার বিবেচনায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের এডিপিতে প্রকল্পটির অনুকূলে বারদ্দকৃত ২০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার অতিরিক্ত আরো ৩৯২ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।

গত মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফরের সময় মীরসরাইয়ে বিনিয়োগের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে। সে সময় উইলমার ইন্টারন্যাশনালের চিফ অপারেটিং অফিসার পুয়া সেক গুয়ান বিনিয়োগের জন্য মীরসরাইয়ে ৫০ একর জমি চাইলে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি দেখে যেতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জমি দেওয়ার ব্যাপারেও সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন তিনি।

 

আগামীনিউজ/এএইচ/আরআর/এএম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে