Dr. Neem on Daraz
Victory Day

শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তিতে সরকারি ব্যাংকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ


আগামী নিউজ | জুনায়েদ সওদাগর প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০, ১২:১২ পিএম
শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তিতে সরকারি ব্যাংকের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

ঢাকা : পুঁজিবাজারকে গতিশীল এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে রাষ্ট্রয়াত্ত্ব রূপালি, জনতা, অগ্রণী, বিডিবিএল ব্যাংকের শেয়ার সরাসরি তালিকাভুক্তি করা হবে। তবে ট্রেজারি কার্যক্রমে যুক্ত থাকায় আপাতত আসছে না সোনালী ব্যাংক। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এর বাস্তবায়নে যথাযথ উদ্যোগ নিতে ‘পুঁজিবাজার উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’কে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ-মন্ত্রণালয়। সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও বিনিয়োকারীদের আস্থা অর্জন প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তারা।  

জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি অর্থ-মন্ত্রণালয়ে, ‘পুঁজিবাজার উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’র সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, পুঁজিবাজারকে গতিশীল এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে প্রথমে রূপালি ব্যাংক ১৫ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়বে। এছাড়া জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক পর্যায়ক্রমে তাদের সরকারি শেয়ারের সর্বোচ্চ ১০ থেকে ২৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়বে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে রূপালি ব্যাংক ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, বেসরকারি ব্যাংক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে সরকারি ব্যাংকের তালিকাভুক্তির কার্যকরী উদ্যোগ এটাই প্রথম। এসব কোম্পানি বাজারে আসলে ভালো। তবে কর্তৃপক্ষকে একটি বিষয় চিন্তা করতে হবে, এদের নিয়ে আসলে বিনিয়োগকারীদের কি সুবিধা দিতে পারবে। শুধু নিয়ে আসলেই হবে না।

সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছেন বাজার পরিস্থিতি ভালো করার জন্য। এটি ভালো। তবে এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশে কার্যক্রমে রয়েছে এমন অনেক ভালো কোম্পানি রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিও রয়েছ। তাদেরকে বাজারে নিয়ে আসতে হবে।

আর সরাসরি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। কর্তৃপক্ষকে চিন্তা করতে হবে, কোনো প্রক্রিয়ায় অনুমোদন দিলে এটি বাজার বান্ধব হবে। আলোচনায় যুক্ত করেন মির্জা আজিজুল।

শিল্পায়নে বাজার কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না এ প্রশ্নে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এটি সম্পূর্ণ সঠিক। এ জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সব স্টেক হোল্ডারদের যথাযথ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনে আগ্রহী কোম্পানি হবে বিনিয়োগকারীদের সার্থ সংশ্লিষ্ট। এই প্রক্রিয়াই বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে পারে। বাজার ঠিক রাখতে হলে সব পক্ষের আস্থা অর্জন করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।

একই প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, সরকারি কোম্পানি আসতে পারলে ভালো। শুনেছি ছয়মাসের মধ্যে আসার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি আশাবাদী না। এরা ভালো করতে পারবে কী না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। আমার মনে হয়না। এর আগের অর্থমন্ত্রীও ১০ বার একি কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। তবে এবার কিছুটা ব্যতিক্রম। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। কিছু একটা হলেও হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমার মতে এসব কোম্পানির ব্যালেন্স শিট ঠিক নাই। এরা লোকসানে রয়েছে। প্রফিট দেখাতে পারবে কী না? এটা বড় প্রশ্ন। তার পরেও সরকারি কোম্পানি বলে কথা। এতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে। আসলে হয়তো বিনিয়োগকারীরা কিছু শেয়ার কিনতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

পুঁজিবাজার শিল্পবান্ধব কী না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শিল্পবান্ধব করার জন্যই স্বনামধন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে নিয়ে আসার জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু যারা বসে আছেন তারা কি করছেন? তাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই। দেশে কী কোনো ভালো কোম্পানি নেই? এসব কোম্পানিকে কেন নিয়ে আসছেনা। ভালো কোম্পানি আসলেইতো বিনিয়োগকারী আগ্রহী হবে। আর বিনিয়োগকারী বিনিয়োগক করলে শিল্প উন্নতি হবে পুঁজিবাজার আস্থার বাজারে পরিণত হবে। উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী শিল্পবান্ধব হবে।’

আগামীনিউজ/জুনায়েদ/হাসি/সবুজ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে