Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে “পিঁড়ির সেলুন”


আগামী নিউজ | নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২১, ১১:০৭ এএম
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে “পিঁড়ির সেলুন”

রুপগঞ্জঃ মানুষ সুন্দর হওয়ার জন্যে কত কিছুই না করে থাকে। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দররূপে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত। আর তাই বিউটি পর্লারগুলোতে নারী-পুরুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায়। মানুষকে দেখতে সুন্দর করা যাদের কাজ, তারাই নরসুন্দর। আমরা যাকে আঞ্চিল ভাষায় বলে থাকি নাপিত। মানুষের সৌন্দয্যের অন্যতম উপকরণ হলো চুল। এই চুল নিয়ে যুগে যুগে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। সেই কারণে কেশ বিন্যাসের কারিগরদের অর্থাৎ নাপিতদের কদর ও প্রয়োজনীয়তা আজও ফুরিয়ে যায়নি। কেশ কর্তন বা সুন্দর্য্যবর্ধন কার্যক্রম সম্পাদন করার পর আমরা অনেকেই এই নরসুন্দরদের খবর রাখি না। রাখার প্রয়োজনও অনুভব করি না।

আধুনিক সভ্যতার ক্রমবির্বতনের ফলে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতি ধারায় এসেছে পরিবর্তন, লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। তাই আজ হাট-বাজারের বট বৃক্ষের ছায়ায়, খেয়াঘাটে, ফুটপাতে কিংবা গ্রামগঞ্জের জলচৌকিতে বা ইটের ওপর সাজানো পিঁড়িতে বসে নাপিতের হাঁটুর কাছে মাথা পেতে দিয়ে আবহমান গ্রামবাংলা মানুষের চুল-দাড়ি কাটার সেই আদি পরিচিত দৃশ্য এখন আর সচারাচর চোখে পড়ে না। তবে এখনও রূপগঞ্জের কিছু হাট-বাজারে কদাচিৎ চোখে পড়ে সেই দৃশ্য। রূপগঞ্জের বরুনা গ্রামের কালিপ্রদ শীল কায়েতপাড়া ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে এ কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জলচৌকিতে বসিয়ে সেই কাঠের বক্স যার মধ্যে ক্ষুর, কাঁচি, চিরুনি, সাবান, ফিটকারি, পাউডার ও লোশন নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে সুন্দর করার কাজ করে যাচ্ছেন। বয়স ৬০ এর কাছাকাছি।

দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ তিনি এ পেশায় আছেন। তিনি বলেন, তখন চুল কেটে মানুষ দিত ৫ টাকা আর দাঁড়ি কেটে ২ টাকা। সে সময়ে শীলদের যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার ভাল ভাবেই চলে যেতো। কিন্তু বর্তমানে ৩০ টাকার চুল ও ২০ টাকায় দাঁড়ি কেটেও সারাদিনে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করতে হিমসিম খেতে হয়। কালিপ্রদ শীল আরো বলেন, পূর্বে আমরা বার্ষিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করতাম। কিন্তু বর্তমানে সেই নিয়ম নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমানে যে পরিবর্তন এসেছে চুল-দাড়ি কাটার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিও পরিবর্তন হয়েছে। সেসব সেলুনে এখন আর শান দেয়া ক্ষুর দেখাই যায় না। তার বদলে এসে গেছে বেলেড   লাগানো ক্ষুর। এসেছে সেভিং ক্রিম, লোশন, ফোমসেভিং, চুলের কলপ। তিনি যখন এ কাজ শুরু করেন তখন তাদের কাছে এগুলো ছিল কল্পনার অতীত।

নগরপাড়া বাজারে আধুনিক ডেকোরেশন করা সেলুনের নাপিত/শীল রিপন সরকার বলেন, এখন আর মানুষ পিঁড়িতে বসে চুল কাটতে চায়না। লুকিং গাøেসর সামনে আরাম কেদারাস/চেয়ারে বসেই মানুষজন চুল কাটতে পছন্দ করেন বেশি।

আগামীনিউজ/জনী

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে