ঢাকা: বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনে(বিএসটিআই) প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের সংকট ও প্রতিষ্ঠানটির সঠিক তদারকির অভাবে নকল ও ভেজাল উৎপাদনকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মানহীন খাদ্যপণ্য উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ছে। রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর নিয়মিত বাজার তদারকিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নকল ও ভেজাল পণ্য তৈরি এবং ওজনে কারচুপিসহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ছে। মানহীন খাদ্যপণ্য নিয়ে আতঙ্কে থাকছেন ক্রেতারা। উৎপাদনকরা অনেকে পণ্য লাইসেন্স পাওয়ার পরো বিভিন্ন নকল ও ভেজাল পণ্য উৎপাদন করছেন, ওজনে কম দিচ্ছেন। ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় বিষয়গুলো ধরা পড়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালে বিএসটিআই জোর পদক্ষেপ না নিলে বাজারে ভেজাল ও মানহীন পণ্যের দৌরাত্ম্য যেমন বাড়বে তেমনি এসব পণ্যে ভোক্তারা মারাক্তকভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে।
খোঁজনিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিএসটিআইর সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। এছাড়া, প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত সক্ষমতা দিয়ে পণ্যের মান প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সারাদেশে পণ্য ও সেবার মান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনের তুলনায় জনবল খুবই কম। এ জনবল দিয়ে বাধ্যতামূলক পণ্যের মান নিশ্চিত করাও অনেক ক্ষেত্রে দুরূহ। এর সাথে যোগ হয়েছে করোনা মহামারি। কারণ এই করোনাকালে আগের মতো সর্বাত্বকভাবে কাজ করতে পারছেনা বিএসটিআই। কারণ হিসেবে জানাগেছে, অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অফিসের কাজ করতে পারছেনা। একারণে নিয়মিত মোবাইল কোর্টগুলো পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছেনা বলেও জানা গেছে।
বিএসটিআই ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বমোট জনবল ছয়শত ৬৪জন। এর মধ্যে সাড়ে চারশত জন কর্মরত আছেন। আবার নতুন পদের সৃষ্টি হয়েছে ৫৭ টি কিন্তু সেসব পদের লোকবল নিয়োগ করা হয় নাই। এরমধ্যে করোনাকালে কিছু লোক আক্রান্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারছে না।
বিএসটিআই এর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আগামীনিউজকে বলেন, বিএসটিআইতে এন্ট্রি পোস্ট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা আছে একারণে এখানে লোক নিয়োগ দিলেও থাকেনা চলে যায়।কারণ হিসেবে তিনি বলেন, একজন মার্স্টাস ডিগ্রীপাশ মেধাবী ছেলে এন্ট্রি পোস্টে দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে থাকতে রাজি নয়। কারণ তারা অনায়াসে অন্য জায়গায় প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পায়। বর্তমানে তারা ৫১ জন লোক পিএসসির মাধ্যমে নেওয়ার জন্য রিকজিশন পাঠানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর পরিচালক (প্রশাসন) তাহের জামিল আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, আমরা এই করোনা কালেও মোবাইবল কোর্ট করেছি, জরিমানা করেছি, প্রতিষ্ঠান সিল গালা করেছি।আমাদের সব কার্যক্রম চলমান আছে।তবে, এই করোনায় বাড়তি হিসেবে যেটা করেছি আমরা বিভিন্ন কারখানার মালিক ও উৎপাদকদের বুঝাচ্ছি দয়াকরে আপনারা খাবারে ভেজাল দিবেন না। কারণ আপনি একজন খাদ্য বিক্রেতা হিসেবে ভেজাল দেবার কারণে আমাদের পুরো শহর বা দেশটাই বিপদের মুখে পড়ছে।
বিএসটিআই এর মহাপরিচালক ড. মো. নজরুল আনোয়ার আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, আমি এখানে যোগদান করার পর প্রতিষ্ঠানটির বাড়তি জনবলের জন্য সাংগঠনিক কাঠামো সংশোধন করা হয়েছে। যে বাড়তি জনবল লাগবে সে চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে জনপ্রসাশন ও অর্থ মন্ত্রণালয় যদি অনুমোদন দেয় তবে আমাদের জনবল বাড়বে। করোনাকালে সরকারী নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম চালানো হচ্ছেও বলে জানান তিনি।
আগামীনিউজ/ইমরান/এমআর