ঢাকা : বিশ্বের দূষিত নদীর তালিকায় বুড়িগঙ্গার নাম উঠেছে অনেক আগেই। এই পর্যায়ে নদীর তীর থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পাশপাশি নদীর পানি দূষণমুক্ত করার কাজ করছে সরকার তথা নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বাষির্কী উপলক্ষ্যে ‘বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ড্রেনেজ-এর মুখে দূষিত পানি পরিশোধনের জন্য দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পাশাপাশি বছরব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানও শুরু করেছে সরকারের এই প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, নদীর অবৈধ দখল ও দূষণরোধে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করা হবে। ইতিমধ্যে বুড়িগঙ্গার পাড় থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে ট্যানারি শিল্প। অপরিশোধিত শিল্প ও পয়োবর্জ্য নদীতে যাতে না ফেলা হয় এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ঢাকা ওয়াসা কাজ করছে। অনেক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হচ্ছে। ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গাসহ অন্যন্য নদীর পানি দুষণমুক্ত করা হবে। এ জন্য আমাদের মন্ত্রণালয় অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি।
তিনি আরো বলেন, এখন আমরা নদীতে আসা বিভিন্ন ড্রেনের মুখ বন্ধ করা, মুখে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের দিকে নজর দিয়েছি। আমরা নিজেরাই ঢাকার সদরঘাটের দুটি ড্রেনের মুখে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমাদের এই আয়োজন। পর্যায়ক্রমে তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীতেও এমন ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের চিন্তাভাবনা সরকারের রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, সদরঘাট লঞ্চ টারমিনাল এলাকার দুটি ড্রেনের মুখে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করবো। এ দু’টি সফল হলে আমরা নিজেরাই সদরঘাট এবং কামরাঙ্গীর চর এরাকার প্রায় ৫০টি ড্রেনের মুখে ইটিপি স্তাপন করবো। এজন্য আমাদের একটি প্রকল্প ব্যয় জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তা অনুমোদন হবে। পরবর্তীতে আমরা তা ওয়াসা বা নিজেরাই বাস্তবায়ন করবো।
বিআইডব্লিউটি এর সদস্য (অর্থ) এবং নদীর তীর সংরক্ষণ ও সীমানা পিলার স্থাপন সংক্রান্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নূরুল আলম আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, আগামীকাল আমাদের এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হবে। এটি আমাদের পাইলট প্রকল্প। এ প্লান্ট থেকে ৬টি পর্যায়ে পানি পারিশোধন হয়ে বুড়িগঙ্গাতে মিশবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২৪ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, পরিবেশ অধিদফতরের সমীক্ষায় দেখা গেছে এখনও প্রতিদিন রাজধানীর চারপাশ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টন বর্জ্য ও ৫৭ লাখ গ্যালন দূষিত পানি নদীতে মিশছে।
আগামীনিউজ/তরিকুল/নুসরাত