ঢাকাঃ সম্প্রতি বিতর্কিত বক্তব্য ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে ডা. মুরাদকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) তিনি মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এরপর তাকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি ও সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে। আজ মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সবসময় মুরাদ হাসানের সহযোগিতা পেয়েছি। তবে গেল তিন মাস ধরে তার আচরণে পরিবর্তন দেখেছি।
বিতর্কিত মন্তব্য আর কল রেকর্ড ফাঁসের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অসন্তোষ’ বুঝতে পেরে ঢাকার বাসভবন থেকে সকালেই চট্টগ্রামের পথ ধরেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা থেকেই তিনি অবস্থান করছেন চট্টগ্রামের স্টেডিয়াম পাড়ার পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লুতে আসেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিতর্কিত এই প্রতিমন্ত্রী। সন্ধ্যায় যখন প্রধানমন্ত্রীর আদেশের বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত হয়, তখনও ডা. মুরাদ হাসান চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লুতেই ছিলেন। ঢাকা থেকে একা এসে রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে ওঠেন ডবল বেডের বিলাসী কক্ষে। গতকাল রাত ২টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছিলেন তিনি। তবে এখন ডা. মুরাদ হাসান কোথায় রয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার আগে মুরাদ দুপুরের দিকে ‘ক্ষমা’ চেয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। লেখেন, ‘আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিবো আজীবন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
এর ঘণ্টা তিনেক পর নিজের পোস্টে নিজেই মন্তব্য করেন মুরাদ। লেখেন, ‘ভুল করে সবাই নিজের ভুল মেনে নেয়ার সততা দেখায় না। আল্লাহ আপনাকে সঠিকভাবে ফিরিয়ে আনুন সকলের মাঝে।’
প্রশ্ন উঠেছে, মুরাদ হাসানের পেজটি আসলে কে বা কারা চালাচ্ছেন।
এদিকে নিজের পোস্টে নিজেই কমেন্ট করে হাস্যরসের পাত্র হয়েছেন মুরাদ হাসান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে এরইমধ্যে ট্রল শুরু হয়েছে। তার মন্তব্যে ১১ হাজার হাহা রিয়েক্ট ও দুই হাজারের বেশি রিপ্লাই জমা পড়েছে।
করিম খান নামে একজন কমেন্ট করেছেন, “নিজের পোস্টে নিজেই সান্তনা দিচ্ছে”। প্রিন্স নামে একজন লিখেন, “চিটারি করতে গিয়ে ধরা খাইছে”। শান্তা নামে একজন কমেন্ট করেছেন, “বেচারা ভুলে রিয়েল আইডি থেকে কমেন্ট করে ফেলছে।”
আগামীনিউজ/এসএস