ঢাকাঃ চঞ্চল চৌধুরীর হার কেপটে, আয়নাবাজি,জাপান ডাক্তার সহ বিভিন্ন চরিত্রে টিক টকে এ অভিনয় করে এবার টিভিতে অভিনয়ের সুযোগ হয়েছে পাবনার সাইমুম সাজিদ এর।সবাই তাকে জাপান ডাক্তার নামেই ডাকে।সাইমুম সাজিদ যেভাবে হলেন জাপান ডাক্তার।সাইমুম সাজিদ জন্ম পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার চরজোড় পুকুরিয়া গ্রামে।বাবা শাহজাহান আলী পেশায় একজন ঔষধ ব্যবসায়ী, মা রুপালী খাতুন গৃহিণী।
সাজিদ পাবনার চিনাখড়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পাশ করেন।এরপর ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি ষষ্ঠ পর্বে পড়াশোনা করছেন।ছোটবেলা থেকেই সাজিদের পড়াশোনার চেয়ে খেলাধুলার প্রতি বেশি আগ্রহ ছিল।বিশেষ করে ক্রিকেট খেলাই ছিল তার নেশা।স্বপ্ন ছিল বড় একজন ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু সাজিদের মা খেলাধুলা পছন্দ করতেন না।তারপরেও সাজিদ যখন লুকিয়ে লুকিয়ে ক্রিকেট খেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে এনে তার মাকে দিত তখন তার মা অনেক খুশি হতেন।অভিনয়ের প্রতিও বেশ আগ্রহ ছিল সাজিদের।সাজিদের বড় দুই ভাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাজিদকে নিয়ে যেতেন।সেখানেই অভিনয় দেখে অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা জাগে সাজিদের।সাজিদের বাবা ও দুই বড় ভাই সাজিদকে সব সময় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।সাজিদ বলেন,একসময় আমার দুই বড় ভাইয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতে যেত আমাকে নিয়ে, তো সেখানকার অভিনয় দেখে আমার খুবই ভালো লাগত। ইচ্ছা হতো ওই রকম অভিনয় করার এবং বাসায় টিভিতে নাটক দেখতাম সেই নাটকের চরিত্রগুলো আব্বু আম্মুর সামনে উপস্থাপন করতাম। এবং আমার বড় দুই ভাই আমাকে বিভিন্ন স্কুলের যেমন খুশি তেমন সাজো প্রোগ্রামে আমাকে অংশগ্রহণ করাতো এবং আমি ওখান থেকে অনেক পুরস্কার পেতাম। এভাবেই আমার ভিতর অভিনয়ের ইচ্ছেটা বেশি করে চলে আসে।
সাজিদ আরও বলেন, বিশেষ করে আমার প্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর ক্যারেক্টারের নাটকগুলো আমি বেশি দেখতাম এবং তার চরিত্রে অভিনয় আমি বেশি করার চেষ্টা করতাম। একটা মজার কাহিনি হলো আমার আম্মু কোন কারনে যখন আমার উপর রাগ হতো আমি অভিনয় করে আমার আম্মুকে হাসিয়ে রাগ ভাঙাতাম। এমনকি যখন পরিবারের সবাই একসাথে হতাম আমি কোনো না কোনো অভিনয়ের চরিত্র নিয়েই কথা বলতাম।সাজিদ দেশের অন্যতম রিয়েলিটি শো এনটিভিতে প্রচার হওয়া দেশের প্রথম মাল্টি ট্যালেন্ট হান্ট রিয়েলিটি শো ‘জিপিএইচ ইস্পাত অনন্য প্রতিভা’ শোতে রাজশাহী বিভাগ থেকে ‘অভিনয়’ ক্যাটাগরিতে ইয়েস কার্ড পায়।এরপর ঢাকার মূল পর্ব কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছে।টিকটকে সাজিদের জনপ্রিয়তার গল্প সাজেদুর আবেদীন শান্ত।সাজিদের প্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তার চরিত্রে অভিনয় করতে সাজিদের বেশি ভালো লাগে। হাড়কিপটে, সাকিন সারিসুরির, জাপান ডাক্তার চরিত্রে অভিনয় করে ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ফেসবুক ও টিকটকে। অনেকেই এখন সাজিদকে চঞ্চল চৌধুরী প্রো-মেক্স বলে ডাকেন।বর্তমানে সাজিদের টিকটকে ৩ লাখ ৫০ হাজারেও বেশি ফলোয়ার রয়েছে। মানুষকে বিনোদন দিতে সাজিদের অনেক ভালো লাগে। বাবা মা, এলাকাবাসী, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধুরা যখন বলে তোমার অভিনয় অনেক ভালো লাগে, চালিয়ে যাও! তাদের এই কথাগুলো সাজিদের অনেক অনুপ্রেরণা যোগায়। অভিনয়টা সাজিদের পেশা না অভিনয়টা তার নেশা। ভবিষ্যতে ভালো একজন অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছাপূরণে কাজ করে যাচ্ছেন সাজিদ।
সাজিদ বলেন, আমার প্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল।কিন্তু তার সামনে যে অভিনয় করব এটা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। মিরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার চ্যাম্পিয়ন আবু হেনা রনি ভাইয়ার স্ক্রিপ্টে ও ওয়াহিদুল ইসলাম শুভ্র ভাইয়ের সহযোগিতায় অনন্য প্রতিভার’ মঞ্চে চঞ্চল চৌধুরীর সামনে ‘হারকিপটে,পাত্রী চাই ও আয়নাবাজির চরিত্রে অভিনয় করে তাকে চমকে দিয়েছিলাম।চঞ্চল চৌধুরী আমার অভিনয় দেখে অবাক হয়ে বলেছিলেন,আমি তো এখানে বসে আছি, তাহলে মঞ্চে পারফরমেন্স কে করছিল? আমি তোমার হেঁটে আসা দেখেই অবাক হয়েছি। তোমার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।