বাংলাদেশী পাসপোর্টে শুধুই বিড়ম্বনা! পৃথিবীর এমন কোন দেশ আছে কিনা যারা সবুজ পাসপোর্ট দেখলে সম্মান করে? অন্ততঃ আমার জানা নেই। ইউরোপ, আমেরিকা এমন কি মধ্য প্রাচ্যের ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশ হলেও বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখলেই নাক সিটকায়। যেন কোন ভিন্ন গ্রহের অপাংতেয় কোন জাতি বা দেশের মানুষ। ল্যাটিন আমেরিকার, আফ্রিকার এমনকি ইউরোপের কিছু দীপরাষ্ট্র বাংলাদেশের নামও জানেনা। এন্টারটিকা ছাড়া বিশ্বের সব মহাদেশেই পদচারণার সুযোগ হয়েছে কিন্তু কোথাও ‘হ্যালো ওয়েলকাম টু আওয়ার কান্ট্রি’ শুনিনি। যখন বিভিন্ন এয়ারপোর্টে বিড়ম্বনার শিকার হই তখন মনে হয় আমরা কি এতই মর্যাদাহীন জাতী? স্বাধীনতার ৫২ বছর পার করেও বিদেশের দরবারে আমাদের বিন্দু মাত্র মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত সম্ভব হলো না? যারা ইউরোপ,আমেরিকা, কানাডা আর আরব আমিরাত সহ বিভিন্ন ধনী দেশে ব্যবসা বানিজ্য করছে, দেশের টাকা পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে, দূনীর্তিবাজ কিছু রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা তাদের কি বিন্দুমাত্র মর্যাদাবোধ আর দেশ প্রেম নেই? তারা কি দেশ আর জাতিকে নিয়ে কোন কিছুই ভাবেনা? কিভাবে আমরা এত স্বার্থপর আত্নকেন্দ্রিক আর মর্যাদাহীন জাতীতে পরিনত হলাম? বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন কিভাবে ধূলিসাৎ হয়ে গেল? আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন কি ছিল মর্যাদাহীন অপাংতেয় জাতীতে পরিনত হওয়া?
মেহনতী কৃষক, শ্রমিকরা কেন জন প্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ আর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের প্রতি ঘৃনাপোষণ করছে তা নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীরা কি কোন গবেষনা করছে? জন প্রতিনিধি আর প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা কি তাদের ইমেজ সংকটের কথা মোটেও ভাবছে? ব্যবসায়ীরা যে নৈতিকতা হারিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে মাফিয়া আর ব্যাংক লুটেরা হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে তা কি তারা মোটেও অবগত নয়? ধর্মীয় নেতারা আর তথাকথিত পীর ফকিররা কি জাতির এই নৈতিক অধঃপতনের দায়িত্ব থেকে দায়মুক্তি নিয়ে ধর্মের নামে নতুন বানিজ্য খুলে আরাম আয়েসে আর রোজগারের পথ সুগম করে দুনিয়াকে বেহেস্ত বানিয়ে ফেলেছে? স্বাধীনতার স্বপ্ন দ্রষ্টার বিদেশের বুকে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন যে এভাবে বিলীন হয়ে অমর্যাদাশীল,অপাংতেয় জাতীর পরিচয় বহন করবে তা অন্ততঃ আমার কল্পনায় ছিল না। বিশ্ববাসী আমাদের কিভাবে চেনে বা তাদের কাছে আমাদের দেশ ও জাতির ইমেজ কেমন তা নিয়ে ৫২ বছরে কোন একজন বাঙালী ও কি ভেবে দেখেছে? এরকম আরও শত সহস্র প্রশ্ন আছে মনে।