Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯০


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২১, ১০:১২ এএম
মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯০

মলয়া সংগীতের জনক, মরমী সাধক, কবি, বাউল ও সমাজ সংস্কারক মনমোহন দত্ত। ছবিঃ সংগৃহীত

যার মন উদাসী হয়েছে
পাগলা রে।
হিন্দু মুসলমান কে হয়
চিনি না তারে।
বুঝতে নারি ছোট বড়ো
চিনতে নারি আপন পর,
ব্রহ্মান্ড বাঁধিয়া রাখছে দেখি এক তারে।
বাগদি হাড়ি, চাঁড়াল মুচি,
কোনটা শুচি হয় অশুচি,
দেখি সকল ভোজের বাজি, রাজি নয় সে ভেদ বিচারে,
অখন্ড মন্ডলাকার
ব্যাপ্ত বিশ্ব চরাচরে,
যা দেখি সব একের খেলা এক বিনা আর নাই সংসারে।
মনোমোহন মন বাবাজি,
ভাঙ্গা তরী বেগুশ মাঝি,
লোচ্চার লোচ্চা,
পাজির পাজি, কেবল বকাবকি করে॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যাঃ
মানুষের মনই কেবল সকল পাপের মূলে। মনের মধ্যেই কেবল সকল ভেদাভেদ সৃষ্টি হয়। মনের মধ্যে কেবল বস্তু আকর্ষণের কারণে সে আপন পর, ছোট বড় এবং সুচী অসুচীর ভেদাভেদ সৃষ্টি করে। ফলে তার মধ্যে আর অখন্ড সত্ত্বার ভাব জাগ্রত হয় না। সে তখন ভেদাভেদ তথা অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। মানুষ যখন কোন প্রজ্ঞাবান সত্ত্বার সংস্পর্শে আসে এবং তার নির্দেশনা মোতাবেক সাধনারত থাকে তখন তার মধ্যে এক শক্তির উদ্ভব হয়। এই শক্তি তাকে তার অন্তরের মধ্যকার অনন্ত শক্তির সাথে সমন্বয় ঘটায়। তখন সে বিশ্ব শক্তিশালী সত্ত্বার সাথে একাকার হয়ে যায়। তখন তার অন্তরের মধ্যে যে শক্তি সৃষ্টি হয় সেই শক্তি পৃথিবীর সব কিছুকেই একাকার করে ফেলে। তখন কোন কিছুকেই আর বিভেদ আকারে দেখে না। তখন সমগ্র বিশ্ব এক সুতাতে বাধা থাকে। তখন চামার মুচি, ছোট বড়, আপন পর, উঁচু নিচু কিছুই থাকে না। ব্রহ্মান্ডের সকল কিছুই এক শক্তির প্রকাশ বলে ধরা দেয়।

অখন্ড বিধাতা তার অখন্ড শক্তি দিয়ে পৃথিবীর মাঝে এক শক্তিশালী অবস্থা হিসেবে বিরাজ করছে। ব্রহ্মান্ডের সব কিছুই এক অখন্ড শক্তির প্রকাশ। এখানে কোন কিছুই মনের লোভ, দ্বেষ ও মোহের কারণে ভেদাভেদ করা যাবে না। যে সত্ত্বা প্রজ্ঞার শক্তিতে সেই প্রকৃত শক্তির সাথে একাকার হয়েছে তার কাছে ব্রহ্মান্ডের সব কিছুই এক ও অভিন্ন।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে