ঢাকাঃ মুহাম্মাদ বিন কাসিমের চেয়ে আমার বয়সটা বেশিই। আমার ঘরটা রাসূল (সাঃ) এর ঘরের চেয়ে বড়। আলী (রাঃ) এর চেয়ে আমার ঘরে ফার্নিচার বেশি আছে। আমার গায়ের রঙটা অন্তত বিলাল (রাঃ) এর গায়ের রঙের চেয়ে উজ্জ্বল। জুলাইবিব (রাঃ) এর চেয়ে আমি উচ্চতায় লম্বা আছি। অথচ তাদের কারোরই বিয়ে করতে বেগ পোহাতে হয় নি।
কারণ তাদের সমাজের ভিত্তি ছিল ইমান। আর আমাদের সমাজের ভিত্তি পূজিবাদ। তাই তাদের সমাজে ইমান ও আমলের প্রতিযোগিতা হতো, আর আমাদের সমাজে অর্থ আর প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা হয়৷ তাদের সমাজে প্রশংসনীয় ব্যক্তিত্ব ছিল তাকওয়া, সাহসিকতা, বীরত্ব, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য। আর আমাদের সমাজে যার সম্পদ যত বেশি, যার ক্যারিয়ার যত ভালো, সে তত অধিক প্রশংসানীয়। আমাদের সমাজে বিয়ে হয় মূলত চামড়া আর টাকার সাথে।
ফাতিমা (রা) এর জন্য রাজা-বাদশা আর নেতাদের পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসছিল। অথচ মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর কন্যা ফাতিমাকে (রাঃ) বিয়ে দিলেন দরিদ্র আলীর (রাঃ) কাছে, যখন আলী (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে ঘরে নিতে লজ্জা পাচ্ছিলেন ফার্নিচারের অভাবে। আচ্ছা, আলী (রাঃ) এর ক্যারিয়ার কী ছিল? জীবিকা নির্বাহের জন্য আলী (রাঃ) কখনো এক বৃদ্ধার জন্য কুয়ো থেকে পানি তুলে দিতেন, বিনিময়ে পেতেন কিছু খেজুর।
এই বিষয়গুলো দ্বীনের লেবাস জড়ানো পূঁজিবাদের দ্বীনদাররা কখনোই বুঝবে না। সমাজে চোখ বুলালে যখন চোখে কেবল চারদিকে মুশরিক আর মুরতাদদের দেখা যায়, তখন এই সমাজ থেকে ইমানী সমাজব্যবস্থার আদর্শ আশা করা কৌতুকের মতো লাগে। খাদিজা (রাঃ) মুহাম্মাদ (সাঃ) কে জাহেলিয়াতের যুগেই তো বিয়ে করেছিলেন। যাকে আমরা "আইয়ামে জাহেলিয়াহ" বলি, সেই যুগটাও আমাদের বর্তমান যুগের চেয়ে অধিক উত্তম ছিল।
লেখক: মীর মুমীন (হাফি:)