ঢাকাঃ মাত্রাতিরিক্ত চিন্তাকেই বলা হয় দুশ্চিন্তা। এটি সবার আগে প্রভাব ফেলে দৈনন্দিন কাজের ওপর। ফলে সময়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়। অতিরিক্ত দুঃখবোধ ও দুশ্চিন্তার কারণে ব্যক্তির ঘুমও কমে যায়। এতে শরীর দুর্বল হয়ে আসে এবং কমে যায় কর্মক্ষমতা। এমন অবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করার বিকল্প নেই।
তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা করার অর্থ হলো- দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য অন্তর থেকে আল্লাহর ওপর নির্ভর করা। বান্দা তার প্রতিটি বিষয় আল্লাহর ওপর সোপর্দ করবে। ঈমানে এই দৃঢ়তা অর্জিত হলে বান্দার দুঃখবোধ ও দুশ্চিন্তা হ্রাস পাবে ইনশাআল্লাহ। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম এ বিষয়ে যাদুল মা’দ গ্রন্থে ছোট্ট একটি আমল তুলে ধরেছেন এভাবে— যে ব্যক্তির দুঃখ ও দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে, সে যেন অবশ্যই পড়ে—
لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ ‘লা হাউলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, অর্থাৎ ‘আল্লাহর সাহায্য ছাড়া অনিষ্ট ও পাপ থেকে মুক্তির কোনো পথ নেই এবং তাঁর সাহায্য ছাড়া ইবাদত করা ও কল্যাণলাভেরও কোনো শক্তি নেই’
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, যখনই চিন্তা, অস্থিরতা, দুঃখ-বেদনায় পড়বে সঙ্গে সঙ্গে ছোট্ট এ আমলটি করবে।
ছোট্ট এই আমলটির আরও ব্যাপক ফজিলত ও তাৎপর্যের কথা বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। বলা হয়েছে, এই বাক্যটি ‘জান্নাতের গুপ্তধনগুলোর একটি’। হাজিম ইবনে হারমালা (রা.) বলেন, আমি নবী কারিম (স.)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন— ‘হে হাজিম! তুমি অধিক সংখ্যায় ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন। (বুখারি: ৪২০৪, ৬৩৮৪, ৬৪০৯, ৭৩৮৬; মুসলিম: ৫৮৯)
অন্য বর্ণনায় এই মুবারক বাক্যটিকে জান্নাতের দরজা বলেও উল্লেখ করেছেন নবীজি (স.)। কাইস ইবনু সাদ ইবনু উবাদাহ (রা.) হতে বর্ণিত, নবী কারিম (স.) আমার কাছ দিয়ে গমন করলেন। আমি তখন মাত্র নামাজ শেষ করেছি। তিনি আমাকে তার কদম মুবারক দিয়ে আঘাত করে বললেন, আমি কি তোমাকে জান্নাতের দরজাগুলোর একটি দরজা সম্পর্কে জানাব না? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’। (তিরমিজি: ৩৫৮১)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে ছোট্ট এ আমলটি করার মাধ্যমে দুঃখবোধ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতের অনেকগুলো গুপ্তধনের মালিক হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
এমএম