Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ধর্ম ও মূর্তি নিয়ে কটূক্তি : ইসলাম কী বলে ?


আগামী নিউজ | ধর্ম ডেস্ক প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১, ১১:২৭ পিএম
ধর্ম ও মূর্তি  নিয়ে কটূক্তি : ইসলাম কী বলে ?

ছবিঃ সংগৃহীত

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সনাতন ধর্মের মূর্তিকে নিয়ে কটূক্তি ও আপত্তিকর মন্তব্য করে। কিন্তু ইসলাম কি মূর্তি নিয়ে কটূক্তি করাকে সমর্থন করে? অন্য ধর্মের উপাস্য বা  মূর্তিকে কটাক্ষ করা বা হেয় করা সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?

‘না’, কোনো ধর্মের মূর্তিকে কটূক্তি করার কথা ইসলাম বলেনি। বরং তা থেকে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কোনো ধর্মের উপাস্য বা মূর্তি নিয়ে কটূক্তি বা সম্মানহানীকর কটাক্ষ করার অনুমোদন ইসলামে নেই। বরং ইসলামই হচ্ছে সহনশীলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যে জীবন ব্যবস্থায় উচ্ছৃঙ্খলতার লেশমাত্র নেই।

যদি কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠী অন্য ধর্মের দেব-দেবীর প্রতি কটূক্তি করে; তবে তা ইসলামের উপর বর্তাবে না বরং তা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর প্রতি এ ব্যাপারে কতই না সুন্দর নসিহত পেশ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلَا تَسُبُّوا الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ فَيَسُبُّوا 

اللّٰهَ عَدْوًا بِۢغَيْرِ عِلْمٍ 

হে ঈমানদারগণ! তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব দেবদেবীর পূজা-উপাসনা করে, তোমরা তাদের গালি দিও না। যাতে করে তারা শিরক থেকে আরো অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে। 

(সূরা আনআম: ১০৮)

বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘কোনো মুসলমান যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুন্ন করে কিংবা তাদের ওপর জুলুম করে, তবে কেয়ামতের দিন আমি মুহাম্মদ ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে লড়াই করব। ’ 

(সুনানে আবু দাউদ : ৩০৫২)

নবী (সা.) আরও বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমকে হত্যাকারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেই ওই ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। ’ 

(সহিহ বোখারি : ৩১৬৬)

বিশ্বনবী সা: বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে বা যুদ্ধের পর কোনো মন্দির-গীর্জা-উপাসনালয় ভেঙে ফেলবে না। 

(মুসান্নাফ আবি শায়বা : ৩৩৮০৪)

মুহাম্মদ (সা.) আরও বলেন, যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়। (সুনানে আবু দাউদ : ৫১২৩)

উস্কানীতে পা দেবেন না। আগে পবিত্র কোরআন, হাদিছ জানুন, পড়ুন, বুঝুন এবং মোমেন হন। ধর্মীয় উগ্রবাদ কখনোই ইসলাম সমর্থন করে না।

সুতরাং ইসলামের নির্দেশনা হলো- অন্য ধর্মের দেব-দেবী, প্রতিমাকে মন্দ বলা যাবে না। এমনকি অন্য কোনো ধর্ম নিয়েও বাড়াবাড়ি করা যাবে না। যেমন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। তিনি বলেন-
 

لاَ إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىَ لاَ انفِصَامَ لَهَا وَاللّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

দ্বীনের (ধর্ম বা জীবন ব্যবস্থার) ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি বা বাধ্যবাধকতা নেই। নিসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত'দের মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভেঙে যাবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৫৬)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। অন্য ধর্মের লোক কিংবা ধর্মের দেব-দেবী ও উপাস্য তথা প্রতিমাসমূহ সম্পর্কে কটূক্তি বা কটাক্ষ করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সংগৃহীত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে