ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের জেরুসালেমে অবস্থিত মসজিদুল আকসা মুসলমানদের কাছে অন্যতম পবিত্র ভূমি। গুরুত্ব ও মর্যাদার দিক থেকে মসজিদুল আকসার অবস্থান তৃতীয়। মসজিদুল আকসা অসংখ্য নবী-রাসূলের স্মৃতিধন্য পুণ্যভূমি এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা। ইসলামের প্রাথমিক যুগে হিজরতের প্রায় ১৭ মাস পর্যন্ত মুসলমানরা মসজিদুল আকসার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করতেন।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদুল আকসাকে পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম মসজিদ বলে উল্লেখ করেছেন। মসজিদুল আকসা সর্বপ্রথম কে নির্মাণ করেছেন তা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। আদি পিতা আদম আলাইহিস সালাম, নুহ আলাইহিস সালামের ছেলে সাম ও মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম আলাইহিস সালাম- এই তিনজনকেই পবিত্র এই মসজিদের প্রথম নির্মাতা বলা হয়ে থাকে।
তবে গবেষক আলেমরা আদম আলাইহিস সালামকে মসজিদুল আকসার নির্মাতা হওয়ার মতকে প্রাধান্য দেন। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদুল হারাম ও মসজিদুল আকসার নির্মাণকালের পার্থক্য বলেছেন ৪০ বছর। আর নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে, আদম আলাইহিস সালাম মসজিদুল হারামের নির্মাতা ছিলেন।
পুনর্নির্মাণ, সংস্কার ও পরিচর্যা মসজিদুল হারামের মতো মসজিদুল আকসাও একাধিকবার পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। আদম আলাইহিস সালামের পর খ্রিস্টপূর্ব দুই হাজার বছর আগে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এর পুনর্নির্মাণ করেন। তার বংশধরদের ভেতর ইসহাক ও ইয়াকুব আলাইহিস সালাম পবিত্র এই মসজিদের পরিচর্যা করেন। খ্রিস্টপূর্ব এক হাজার বছর আগে সুলাইমান আলাইহিস সালাম মসজিদুল আকসা পুনর্মির্মাণ করেন।
এই মসজিদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেরাজের স্মৃতি। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী ফিলিস্তিন ভূমিতে অবস্থিত এই মসজিদে নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।
এ বিষয়ে এক হাদিসে হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মসজিদে হারামে এক নামাজ এক লাখ নামাজের সমান, আমার মসজিদে (মসজিদে নববী) এক নামাজ এক হাজার নামাজের সমান এবং বাইতুল মাকদাসে এক নামাজ ৫০০ নামাজের সমান।’ -(মাজমাউয যাওয়াইদ, ৪/১১)
আরেক হাদিসে হজরত আবু সাইদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘(ইবাদতের উদ্দেশ্যে) তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও ভ্রমণ করা যাবে না। মসজিদুল হারাম, আমার এই মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।’ (মুসলিম, হাদিস, ৮২৭)
এমআইসি