Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বস্ত্র - পোষাক - Dress = নারীর পোশাক


আগামী নিউজ | ফার্মার বিপ্লব প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৩, ০৯:১৭ পিএম
বস্ত্র - পোষাক - Dress = নারীর পোশাক

ঢাকাঃ নগ্নতার যুগ থেকে যখন মানুষ সভ্য হতে শুরু করলো, প্রথমেই তারা নিজেদের শরীরের লজ্জাস্থান ঢাকা শুরু করেছে। গাছের পাতা ও ছাল দিয়েই শুরু হয় প্রথম এই ঢেকে রাখার কাজ। সময়ের ব্যবধানে আরও সভ্য ও উন্নত হয়ে বিভিন্ন পন্থায় মানুষ কাপড় তৈরি করে। মানুষ প্রয়োজনে ও তার সেই আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকমের পোষাক তৈরি করে। 

এই নগ্নতা থেকে ভদ্রতা তিনিই শিখিয়েছেন, যিনি মানুষ বানিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সাথে সাথে তিনি তাঁর মেসেজ পাঠানো শুরু করলেন মানুষের কাছে। জানাতে শুরু করলেন কেন তাকে পাঠিয়েছেন, কি তার ডিউটি। মানুষ ভাগ হতে শুরু হলো অনুসারীদের মতামতের ভিত্তিতে। 
প্রয়োজনীয়তা ও পছন্দ অনুযায়ী নির্বাচিত হতে থাকলো পোষাক। কেউ সৃষ্টিকর্তার দীক্ষা অনুযায়ী বা কেউ তার আবহাওয়া অনুযায়ী বা কেউ তার মনের ইচ্ছায় পোষাক নির্বাচন করে নিলো। কেউ তাতে কোন মতান্তর করলো না।

দিন দিন মানুষ আরো জ্ঞানী হওয়া শুরু করলো আর ওখান থেকে ছিটকে পড়া কিছু জ্ঞানপাপী নিজের কোন অবস্থান খোঁজে না পেয়ে শুরু করলো নারী নিয়ে সমালোচনা। অবসরে থাকা অলস মানুষ বিনোদনের আশায় তাদের সাথে হাস্যরসে শরিক হলো। জ্ঞানপাপীরা নিজেদের অনেক উচ্চমানের জ্ঞানী ভাবতে শুরুও করলো। তৈরি হয়ে গেলো বিশাল বাজার। এই জ্ঞানপাপী দিয়ে ভরে গেল সমাজের প্রতিটা সেক্টর। কেউ আস্তিক বা কেউ নাস্তিক। তবে তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু একই - নারী। কেউ তাকে বেশী কাপড় পড়াতে চায়, কেউ তার গায়ের কাপড় খুলে ফেলতে চায়। বিষয় একটাই - নারী। 

কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে বলছে, নারীর শরীরের ১ ইঞ্চি জায়গাও খোলা রাখতে পারবে না। কেউ বলছে সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে মানুষ পাঠান নগ্ন করে, তাই ১ ইঞ্চি জায়গাও ঢেকে রাখা যাবে না। কেউ বলছে ততটুকুই,‌ যতটুকু তার দেখতে মন চায়।

অথচ পোষাক হচ্ছে সভ্যতার সবচাইতে বড় অবদান।

আমি একটু ধর্মীয় দিকটায় নজর দিচ্ছি - বিশ্বে প্রায় ৪,৫০০ ধর্মীয় মতামতের মানুষ থাকলেও চারটা ধর্মের মানুষ সবচাইতে বেশী। আর যে কোন আলোচনায় এই চার ধর্মের মানুষই মতামত দেয়। যদিও জীবিত কালীন সময়ে সবাই ধর্ম পালন না করলেও শেষকৃত্য হয় তার নির্বাচিত ধর্মের সংস্কৃতি মেনেই।

মূল বিষয়টা এখানেই। একটু ভাল করে খেয়াল করে দেখুন, প্রত্যেকটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কিন্তু মানুষ মার্জিত পোশাক পড়েই তা পালন করে। হোক তা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। প্রাত্যহিক জীবনের ধর্মীয় কর্মও তারা মার্জিত পোশাক পড়েই কমপ্লিট করে।

যে মানুষটি নগ্ন বা অর্ধনগ্ন থাকতে পছন্দ করে, সেও কিন্তু ঐ একটা সময় পোশাক পরিবর্তন করতে পছন্দই করছে বা বাধ্য হচ্ছে। তার মানে ঐ জায়গায় সবাই একমত আর তা হলো "মার্জিত পোশাক"।

কেউ হয়তো বছরে ১-২ বার ধর্ম পালন করে, কেউ সপ্তাহে, কেউ দিনের কিছু সময়, কেউ দিনের ২৪ ঘন্টা ধর্মীয় অনুশাসনে থাকতে পছন্দ করে। এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তি স্বাধীনতা। তার উপর কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক।

বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৮০০ কোটি মানুষ। ভিন্ন মতভেদে থাকার পরও সৃষ্টিকর্তা যখন তাকে খাইয়ে পড়িয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাহলে কোন একক মতবাদের কথা বলে সবাইকে কমপ্লিট ঢেকে বা নগ্ন করার জন্য বাধ্য করা কি ঠিক ? বেঁচে থাকার জন্য স্বাধীনতা যদি সৃষ্টিকর্তা তাকে দিয়ে থাকে, পোশাক পড়ার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার আপনি কে ?  

স্বাধীনতা দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা, স্বাধীনতা দিয়েছে রাস্ট্র, স্বাধীনতা দিয়েছে পরিবার।

সর্বোপরি ভদ্রতা, সভ্যতা, নগ্নতা একটি সামাজিক ও পারিবারিক মানসিকতা ও শিক্ষা এবং সংস্কৃতির বিষয়। সেই স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার প্রত্যেকটা মানুষের আছে। রাস্ট্রও দিয়েছে।

ইচ্ছে হলে আপনার পক্ষের যুক্তি তুলে ধরুন সমাজের কাছে। যে পছন্দ করবে সে আপনার অনুসারী হবে। 
জোড় করে নিজের ক্ষমতা দেখানো ঠিক নয়। 
লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দীন।

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে