ঢাকাঃ ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহাতেও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। এখন পাওয়া যাচ্ছে ফিরতি টিকিট। সোমবার (২৬ জুন) ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন চলছে।
এদিকে, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীর চাপ ততই বাড়ছে। সোমবার সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে স্টেশনে। তবে টিকিটবিহীন যাত্রীদের ক্ষেত্রে এবার কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কোনো যাত্রী বিনা টিকিটে স্টেশনে ঢুকতে পারছেন না।
সোমবার (২৬ জুন) কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এই চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদযাত্রায় টিকিটের ব্যবস্থা শতভাগ অনলাইনে বিক্রির কারণে বিগত সময়ের মতো রাত জেগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি যাত্রীদের। তবে যারা অনলাইনে টিকিট কাটতে পারেননি, তাদের জন্য স্টেশনে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে সেখানেও তেমন ভিড় নেই। সহজেই টিকিট কেটে গন্তব্যে যেতে পারছেন তারা। স্টেশনে ঢুকতে তিনটি তল্লাশি চৌকি পার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, সোমবার দিনের প্রথম আন্তঃনগর ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ঈদুল আজহায় ঈদযাত্রা শুরু হবে। এদিন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ট্রেনযোগে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন।
এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কোনো অভিযোগ নেই। ট্রেন যথা সময়েই ছেড়ে যাচ্ছে। কথা হয় তিস্তা এক্সপ্রেসের যাত্রী সোহেলের সাথে। তিনি বলেন, আগে গ্রামে যেতেই ভোগান্তি পোহাতে হতো। এবার তেমন কোনো সমস্যা দেখছি না। আগে থেকেই টিকিট পাওয়ায় এসব ঝামেলা আর হচ্ছে না।
মহানগর প্রভাতীর যাত্রী রেজা বলেন, আগের থেকে এবার ঈদযাত্রা ভালো লাগছে। আমি অনলাইনে দুটো টিকিট কিনেছি। পরিবারের সবাই একসাথে ঈদ করতে যাচ্ছি। অনলাইনের টিকিটের কারণে অনেক ভালো হয়েছে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, সকাল থেকে সবগুলো ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। শতভাগ অনলাইনে টিকিট বিক্রি ও ২৫ ভাগ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির ফলে রেলের লাভ লোকসান বিবেচ্য বিষয় নয়। যাত্রী সাধারণরা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ যাত্রা যেন করতে পারে এটাই আমাদের লক্ষ্য। যাত্রীদের ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে স্টেশনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। টিকিট ছাড়া কাউকে প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে, গত ১৪ জুন থেকে আন্তঃনগর ট্রেনের ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। রেলওয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জুন দেওয়া হয় ২৪ জুনের টিকিট। একইভাবে ১৫ জুন দেওয়া হয় ২৫ জুনের, ১৬ জুন ২৬ জুনের, ১৭ জুন ২৭ জুনের এবং ১৮ জুন দেওয়া হয় ২৮ জুনের অগ্রিম টিকিট।
আর ঈদযাত্রার ট্রেনের ফিরতি অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয় ২২ জুন থেকে। সেই হিসাবে ২২ জুন দেওয়া হয় ২ জুলাইয়ের টিকিট। যথাক্রমে ২৩ জুন ৩ জুলাইয়ের, ২৪ জুন ৪ জুলাইয়ের, ২৫ জুন ৫ জুলাইয়ের ও ২৬ জুন ৬ জুলাইয়ের টিকিট দেওয়া হচ্ছে ফিরতি ট্রেনের টিকিট।
এবারও ঈদযাত্রায় আসনবিহীন বা স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হবে মোট আসনের ২৫ শতাংশ। ঢাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশন থেকে এসব টিকিট পাওয়া যাবে। শুধু যাত্রা শুরুর দিন আসনবিহীন টিকিট স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনা যাবে।
এবার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট শতভাগ অনলাইনে দেওয়া হলেও টিকিট বিক্রিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। অনলাইনে দুই ভাগে দেওয়া হয় অগ্রিম টিকিট। ঈদযাত্রায় পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে পাওয়া যায় সকাল ৮টা থেকে। আর দুপুর ১২টা থেকে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়।
বুইউ