সপ্তাহ গড়ালেই সিটি নির্বাচন। প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রচার। পোস্টার, ফেস্টুন আর মাইকিংয়ে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২নং ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা ভাঙাচোরা রাস্তা , যত্রতত্র আবর্জনা আর মশার উপদ্রব। ১২ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনে মিরপুর ১২ নম্বর সেকশন ও তার আশপাশের এলাকা নিয়ে গঠিত ২নং ওয়ার্ড। এটি মিরপুর-১২ ও পল্লবী থানার অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ডটির পূর্বে রয়েছে মানিকদী, পশ্চিমে পল্লবী প্রধান সড়ক, উত্তরে হরিরামপুর ইউনিয়ন ও দক্ষিণে সাংবাদিক প্লট।
ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাই ভাঙাচোরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু রাস্তার মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার মোড়ে আবর্জনার স্তূপ আর ড্রেনেজ ময়লা দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। এলাকায় পর্যাপ্ত খেলার মাঠ থাকলেও সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না নিয়মিত। তবে সম্প্রতি এলাকার বেশ কিছু পার্কের সংস্কার করা হয়েছে। নিচু ড্রেন ভেঙে উঁচু করা হয়েছে।
মশার উপদ্রবে নাজেহাল এই এলাকার মানুষ। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, অনিয়মিতভাবে মশার ওষুধ ছেটানোয় আর যত্রতত্র ময়লা থাকায় মশার অত্যাচার থেকে নিস্তার পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকাবাসীর আশা সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলর হিসেবে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তারা এসব সমস্যার সমাধানে কাজ করবেন। অন্যদিকে প্রার্থীরাও এলাকার সব সমস্যার সমাধানে কাজ করবেন এমন প্রতিশ্রুতিই দিচ্ছেন।
এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মাসুদ জানান, ধুলা আর মশা এলাকার প্রধান সমস্যা। হকার, ফেরিওয়ালারা রাস্তার মোড়ে ময়লা ফেলে রেখে যায়। ভাঙা রাস্তাঘাটে চলতে সমস্যা হয়।
২নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকা হলো : মিরপুর ১২ (ব্লক-বি, সি, ডি, ই, ত, ধ, প), ডুইপনগর (উত্তর ও দক্ষিণ), চাকুলী, মিরপুর ডিওএইচএস, উত্তর কালসী, শহীদবাগ। এই ওয়ার্ডটিতে বিহারি ক্যাম্প আছে বেশ কয়েকটি। এর মধ্যে মেডিকেল ক্যাম্প, স্কুল ক্যাম্প, মোরাপাড়া ক্যাম্প, বগুড়া ক্যাম্প, ইরানি ক্যাম্প ও কুর্মিটোলা ক্যাম্প উল্লেখযোগ্য।
নবনির্ধারিত ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরের ২ নম্বর ওয়ার্ডটি আগেও ২ নম্বর ওয়ার্ড নামে পরিচিত ছিল। বিশাল এলাকা নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ডে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি। শোনা যায়, বিহারির বসতি থাকায় মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের নির্মম অত্যাচার করা হতো।এলাকার ডি-ব্লকের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মসজিদ নির্মাণ করতে গেলে পাওয়া যায় শহীদদের অস্থি, খুলি ও মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত জিনিসপত্র।
এই এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ২নং ওয়ার্ডে পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আলহাজ কদম আলী মাতবর টিফিনকারী মার্কায়, গতবারের কাউন্সিলর ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন ঘুড়ি ও সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন বেনু ঠেলাগাড়ি মার্কায়।
পূর্বের কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন আগামীনিউজকে বলেন, আমি এই এলাকার সন্তান। পার্কসহ রাস্তাঘাটের উন্নয়নে আমি কাজ করেছি। আগামীতে সুযোগ পেলে অত্যাধুনিক ওয়ার্ড গড়ে তুলব।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসমাইল হোসেন বেনু বলেন, কাউন্সিলর হিসেবে আমি একটানা ২৪ বছর কাজ করেছি। এই এলাকার কমিউনিটি সেন্টার, খেলার মাঠ, পার্ক, সুপ্রশস্ত সড়ক সবই আমি করেছি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কদম আলী মাতবর বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যেভাবে উন্নয়ন করছেন সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আমি কাজ করব। এলাকার সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহর পাশে থেকে এই এলাকার অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি আমি। জনগণের সেবাই আমার মূল উদ্দেশ্য।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মশানিধন কার্যক্রম চালানো হলেও তা নিয়মিত না। প্রতিদিন ভোরে রাস্তা পরিষ্কারের নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না। যেখানে সেখানে পড়ে থাকে ময়লা। এলাকাবাসী বলছেন, তারা সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। এলাকার উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন আমরা তাকেই নির্বাচিত করব।
আগামীনিউজ/এমএস/হাসি/এনএনআর