ঢাকাঃ নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধসহ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি। সাধারণ সম্পাদক ড. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে দলটির ১০ নেতা বুধবার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংলাপে অংশ নেয়।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো নীতিতে ভোট চায় দলটি। এছাড়াও স্বাধীনতাবিরোধী দল, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা থাকবে না বলে প্রস্তাব করে গণতন্ত্রী পার্টি।
গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সংলাপ চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। আজ বুধবার (২০ জুলাই) সংলাপের চতুর্থ দিন।
সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনার, ইসি সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
সংলাপের শুরুতে লিখিত বক্তব্যে নির্বাচনের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করতে ধন্যবাদ জানায় গণতন্ত্রী পার্টি।
নির্বাচন নিয়ে নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরতে গিয়ে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারের নির্বাচন কমিশন আমাদের পবিত্র সংবিধানের ১১৮ নং অনুচ্ছেদের আলোকে নির্বাচনী আইন প্রণয়নের মাধ্যমে একটি কাঠামো তৈরি করে তৎপ্রেক্ষিতে আপনাদের নির্বাচিত করা হয়েছে। যা বিগত ৫০ বৎসরে ও এই আইন পার্লামেন্টে উত্থাপিত হয়নি। বর্তমান সংসদ এই আইন পাশ করে একটি যুগান্তকারী ভূমিকা নিয়েছে। তার জন্য আমাদের সরকার প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
শাহাদাত হোসেন বলেন, এবারের কমিশন যেহেতু সাংবিধানিক ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গঠিত হয়েছে তাই আপনাদের কাছে জনগণের দায়িত্ব ও প্রত্যাশা অনেক বেশি। গণতন্ত্রী পার্টির পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত প্রস্তাব পেশ করা হলো-
১। সকল দলের অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা অর্থাৎ 'আমার ভোট আমি দেব যাকে ইচ্ছে তাকে দেবো' এই নীতির আলোকে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।
২। নির্বাচনে কালো টাকা, পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধের লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা নেওয়া। এই প্রসঙ্গে 'গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অধ্যায় ২ নির্বাচন কমিশন ৫ এর (২) ধারা অনুযায়ী সরকারের সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ কমিশনকে উহার দায়িত্ব পালনে সহায়তা প্রদান করবে এবং এই উদ্দেশ্যে কমিশন রাষ্ট্রপতি, কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ নির্দেশনাবলী জারি করিতে পারিবেন'।
এই বিধির আলোকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনকালীন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক করার জন্য কালো টাকা, পেশিশক্তি রোধ করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, সকল কর্মকাণ্ড আমাদের পবিত্র সংবিধানের আলোকে হতে হবে।
৩। নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪। স্বাধীনতাবিরোধী কোনো রাজনৈতিক দল এবং যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তি নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
৫। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন করা যেতে পারে। তবে, ইহা যেহেতু মেশিন, নিয়ন্ত্রণ করবে নির্বাচন কমিশন, তাই কোনো অবস্থাতেই যাতে কেউ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হ্যাকিং না করতে পারে সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে।
একই দিন দুপুর ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সঙ্গে সংলাপের সময় নির্ধারিত ছিল। পরে দলটির সঙ্গে সংলাপের তারিখ পরিবর্তন করে ২৭ জুলাই নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে গত তিন দিনের সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া ১২টি দলের মধ্যে বিএনপির দুই শরিক বাংলাদেশ মুসলিম লিগ ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি সংলাপে অংশ নেয়নি। আর বিএনপিও আগেই জানিয়ে দিয়েছে তারা অংশ নেবে না।
বর্তমান ইসির ডাকে এবারই শুধু নয়, এর আগেও তাদের আমন্ত্রণে একবারের জন্যও ইসিতে যায়নি বিএনপি। এমনকি এই কমিশন গঠনের আগে রাষ্ট্রপতির সংলাপেও অংশ নেয়নি দলটি।
এমবুইউ