সিলেট জেলার অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহ্যবাহী এক থানা গোলাপগঞ্জ। গোলাপগঞ্জের যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু সবুজের সমারোহ, উঁচু উঁচু পাহাড়সম টিলা, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ, কারুকাজমণ্ডিত ঐতিহাসিক স্থাপনা, মসজিদ, মন্দির, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কুঁড়েঘর ও অত্যাধুনিক দালান অপরূপ এক সৌন্দর্যের আবহ সৃষ্টি করেছে।
গোয়াসপুরের মনোমুগ্ধকর স্থানসমুহের মাঝে অন্যতম হলো ঐতিহ্যবাহী বলগের টিলা, লস্কর বাড়ি (মন্ত বাড়ি), পশ্চিমবাড়ির বাদাম বাগান, সাঝির বাড়ি টিলা, উঁচাবাড়ি টিলা, চিটামঠকি টিলা, নয়াবাড়ি এবং কুতুব আলী স্কুল, গোয়াসপুর জামে মসজিদ। এছাড়া রয়েছে পুরানবাড়ি, হানাবাড়ি।
বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য। অথচ বাড়ির পাশেই রয়েছে প্রকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ নিদর্শন গোলাপগঞ্জ উপজেলার গোয়াসপুর গ্রাম। এছাড়া আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে রয়েছে প্রকৃতিক সৌন্দর্যের অপার সম্ভার। বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামই চমৎকার এবং অপূর্ব। আর বাংলাদেশের সিলেটেই একটি সবুজ, শ্যামল, টিলাবেষ্টিত গ্রাম গোয়াসপুর।
টিলাবেষ্টিত আঁকাবাঁকা রাস্তা আর সবুজের সমারোহই গোয়াসপুর গ্রামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে সহজেই হারিয়ে যাবেন প্রকৃতির মাঝে।
সিলেটের পুরানপুল বা নয়াপুল থেকে জকিগঞ্জ রোড হয়ে গোলাপগঞ্জ থানাস্থ মাটির দোকানই হলো গোয়াসপুরের প্রবেশপথ। এছাড়াও চন্দনভাগ লংলীপুল, তেরমাইল, তালগাছের তলের পুল এবং চৌঘরী বাজারের মুখ হয়েও গোয়াসপুরে প্রবেশ করা যায়।
মাটির দোকান দিয়ে প্রবেশের সময় ডানদিকে সবুজ ফসল তারই অনতিদূরে সুন্দর ঘরবাড়ি, বামদিকে একটু উঁচু ভূমিতে পুরাতন ঘরের আদলে বাড়ি, সামনে অগ্রসর হলেই সবুজ গাছগাছালি ও জনবসতিপূর্ণ খলত, তারপরই কারুকাজমণ্ডিত মসজিদ, আধুনিকশৈলীর প্রাইমারি স্কুল, সবুজঘেরা নয়াবাড়ি, টিলার ওপরে আধুনিক শৈলীর উঁচাবাড়ি, আরেকটু সামনেই একখণ্ড সবুজ বাগান আর তার মাঝেই অবস্থিত পাঞ্চায়িতী সময়ের গ্রাম্য সহকারী পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল রশিদ লস্করের (মৃত) বাড়ি, যা এলাকায় সাঝির বাড়ি নামে খ্যাত।
সামনে অগ্রসর হলেই চোখের সামনে নয়নাভিরাম লামারবাড়ি, এর সামনে শানবাঁধানো পুকুরঘাট, চতুর্দিকে সবুজ বেষ্টনী, লামারবাড়ির উল্টোদিকে ছায়া ঢাকা আকলের বাড়ি, বাড়ির সামনে ঘনবন বাড়িকে এনে দিয়েছে নান্দনিক রূপ। লামারবাড়ির পাশেই রয়েছে পুরানবাড়ি খ্যাত চিরসবুজ বাড়ি। তার সামনে রয়েছে সবুজ বনানী ও টিলা, টিলার পাশ দিয়ে বের হলেই টিলার মাঝে সুন্দর এক বাড়ি, নাম তার ভাঙাবাড়ি, সামনেই রয়েছে সবুজশ্যামল ছায়াঘেরা লস্কর বাড়ি (মন্তবাড়ি), চতুর্দিকে সবুজ মাঠ বাড়িটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পেছন দিকের রাস্তা হয়ে সামনে অগ্রসর হলে চোখের সামনে পড়বে নয়নাভিরাম বনানীবেষ্টিত বলগের টিলা, তারই পাশ দিয়ে বহে চলা আঁকাবাঁকা রাস্তা, রাস্তার বামপাশে সবুজ ধানক্ষেত, আর ধানক্ষেতের পাশেই সূর্য টিলা, যা গ্রামটিকে নান্দনিক রূপ দান করেছে।
আগামী নিউজ/এইচএল/এসএম/ এনএনআর