ঢাকাঃ হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী দুবাইয়ে অবস্থানরত ৪৫৯ বাংলাদেশির অবৈধ সম্পদের খোঁজে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই সঙ্গে বিষয়টিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করেছে দুদকের প্রধান কার্যালয়। সোমবার (১০ এপ্রিল) দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পত্তি থাকার বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করেছিলেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। পরে এ বিষয়ে শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত ১৬ জানুয়ারি আইনজীবী সুবীর নন্দী দাসের করা রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে দুবাইতে অবস্থানরত ৪৫৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকের সম্পদ ক্রয়ের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনার ব্যাপারে সে সময় দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, আমরা জেনেছি সুপ্রিমকোর্ট আমাদের তদন্ত করতে বলেছে। তবে আদেশটা হাতে পাইনি। আদেশ পেলেই আমরা অবশ্যই তদন্ত করব। তদন্ত করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করা হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়ে থাকলে আমরা কাউকে ছাড় দেব না।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির হাজার প্রপার্টি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর একাংশে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে-গোপনে বিপুল পরিমাণ মূলধন স্থানান্তরিত হচ্ছে দুবাইয়ে। এ অর্থ পুনর্বিনিয়োগে ফুলে ফেঁপে উঠছে দুবাইয়ের আর্থিক, ভূসম্পত্তি, আবাসনসহ (রিয়েল এস্টেট) বিভিন্ন খাত।
এতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সি৪এডিএস) সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে প্রপার্টি কিনেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি প্রপার্টি ক্রয়ের তথ্য পাওয়া গেছে, কাগজে-কলমে যার মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার। তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ (সি৪এডিসি) গত বছরের মে মাসে তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে উপসাগরীয় দেশগুলোতে মূলত পাচার করা অর্থ দিয়ে আবাসন সম্পদ কেনার বিষয়টি তুলে ধরলে এই বিষয়টি সামনে এনেছে।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তথ্য লুকিয়ে ৩১৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৪৫৯ জন বাংলাদেশি দুবাইয়ে মোট ৯৭২টি আবাসন সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসব সম্পদের মধ্যে ৬৪টি দুবাইয়ের অভিজাত এলাকা দুবাই মেরিনা ও ১৯টি পাম জুমেইরাহতে অবস্থিত। যেখানে অন্তত ১০০টি ভিলা ও কমপক্ষে ৫টি ভবনের মালিক বাংলাদেশি বলে জানা গেছে। এছাড়াও চার থেকে পাঁচ জন বাংলাদেশি প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক। যদিও প্রতিবেদনে কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
বুইউ