চট্টগ্রাম-৮ আসন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট ডাকাতির মহোৎসব হয়েছে উল্লেখ করে ওই আসনে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে সকালে সিইসির সভাকক্ষে ইসি কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। পরে বৈঠক শেষে দুপুরে আমীর খসরু সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের নির্বাচনে কী ঘটেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রকাশ হয়েছে। সেটি নিয়ে আজ কথা বলেছি। যা হয়েছে তা ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের চেয়েও অনেক বেশি খারাপ হয়েছে।
চট্টগ্রামে সব কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ১৭০ পোলিং স্টেশনের মধ্যে সবই দখল করে নিয়েছিল ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী কেন্দ্রের বাইরে কেউ থাকতে পারবেন না, গাড়ি-মোটরসাইকেল চলবে না। কিন্তু সেখানে চট্টগ্রাম বিভাগের যত মেয়র, কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থান দৃশ্যমান ছিল। সবাই সরসরি কেন্দ্র দখল করেছে, মিছিল করেছে। যেখানে ভোট দেয় তা দখল করে নিয়েছে। মৃত মানুষের ভোট, প্রবাসীদের ভোট, জেলে থাকাদের ভোটও দিয়েছে। ইভিএমে ভোট ডাকাতি হয় চট্টগ্রামের ভোটে তা প্রমাণিত হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা অধিকতর খারাপের দিকে যাচ্ছে। উন্নতি তো দূরের কথা, অবনতির দিকে যাচ্ছে, ফলে আস্থাহীনতা বাড়ছে।
আমীর খসরু বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের ভোটে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেয়নি। যারা যেতে পেরেছে তারা আঙুলের ছাপ দিয়েছে, ভোটের ব্যালট ইউনিটে ভোটের কাজ তারা সেরে ফেলেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে সেখানেও এমন হয়েছে, কিন্তু চট্টগ্রামে তার চেয়েও খারাপ হয়েছে।
তিনি বলেন, কমিশনকে অনুরোধ করেছি চট্টগ্রামের নির্বাচনটি বাতিল করে দিন। ব্যালটের মাধ্যমে পুনর্নির্বাচন দিন। কারণ দিনের আলোর মতো পরিষ্কার সেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ ছিল না। সেখানে কেন্দ্র দখল করেছে, ইভিএমের পাসওয়ার্ড নিয়েছে, ব্যালট ইউনিটে তারা ভোট দিয়েছে। আমরা বলেছি ভোট বাতিল করে ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা করুন। ইভিএমের ভোটে জালিয়াতি হলেও চ্যালেঞ্জের কোনো সুযোগ নেই।
কমিশন কী বলেছে জানতে চাইলে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, তারা বলছে সব ঠিক আছে। আগে ৩০ ডিসেম্বরেও বলেছিল সব ঠিক আছে, এখনো তাই বলছে।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, আমাদের উত্তরের প্রার্থী তাবিথের ওপর হামলা হয়েছে। এ্যানীসহ ১৫ জন হামলায় আহত হয়েছে। ঢাকার নির্বাচনে তারা রাস্তার ওপর অফিস করেছে, পোস্টার লাগিয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রার্থীকে বাধা দিচ্ছে।
বৈঠকে ইসির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সিইসি কেএম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, মো. রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম। এছাড়াও ছিলেন ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে অন্যদের মধ্যে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চট্টগ্রাম দক্ষিণের বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
আগামীনিউজ/এসএম/হাসি/এনএনআর