Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জনসনের টিকা পাবেন ভাসমান জনগোষ্ঠী : স্বাস্থ্যমন্ত্রী


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২, ০৩:০৬ পিএম
জনসনের টিকা পাবেন ভাসমান জনগোষ্ঠী : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি জেনসেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেশের ভাসমান জনগোষ্ঠীকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু জনসনের টিকা এক ডোজ দিলেই হয়। তাই ভাসমানদের এই টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) মিলনায়তনে করোনার টিকা এবং করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, জনসনের টিকা এক ডোজের হওয়ায় আমরা সেগুলো ভাসমান ও দিনমজুরদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ তাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা না থাকায় তাদের খোঁজ সবসময় পাওয়া যায় না। একবার এক ডোজ দিয়ে দিলে পরে তাদের আর খুঁজতে হবে না।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ১৫ কোটি ৭০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকার আওতায় এসেছে ৯ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে ৬ কোটির বেশি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে। এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের এক কোটি ৪০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে।’

সংক্রমণ বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে চায়। এটি করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

টিকার বয়সসীমা পাঁচ বছর করার পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বয়সসীমা পাঁচে নামানোর ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা পর্যালোচনা করে জানাবে। তাদের বার্তা পেলে টিকার বয়সসীমা পাঁচ বছরে নামিয়ে আনা হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের হাতে এই মুহূর্তে ৯ কোটি টিকা আছে, যা দিয়ে ৪ কোটি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে। এত দিন আমরা শুধু স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়েছি, এখন ১২ বছরের বেশি যেকোনো শিশুই টিকা নিতে পারবে। 

জাহিদ মালেক বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, বাংলাদেশেও একই মাত্রায় বিস্তার ঘটছে। ওমিক্রনের প্রভাবে আগের তুলনায় ২০ গুণ শনাক্ত বেড়েছে। একই সঙ্গে মৃত্যু বেড়েছে ৪ গুণের বেশি। সংক্রমণ বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। 

ওমিক্রনকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওমিক্রনের আগে দেশের সব হাসপাতালে দু-আড়াই শ রোগী ছিল, যা এখন আড়াই থেকে তিন হাজারে দাঁড়িয়েছে। এটি আরও বাড়তে থাকবে। 

ভ্যাকসিন দেওয়ার ফলে মৃত্যু কমেছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, যেখানে ভারতে গতকাল ৮০০ মারা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে হাজারের বেশি, সেখানে আমাদের এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি কমাতে হলে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যে হারে আক্রান্ত দেখতে পাচ্ছি, প্রকৃত অবস্থা অনেক বেশি। অফিস অর্ধেক লোক দিয়ে চালানো হচ্ছে কিন্তু অন্য সবখানে মানুষের ভিড় লেগেই আছে। 

জাহিদ মালেক বলেন, ‘গত এক মাসে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। এটা মাইলফলক। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৫ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ১০ কোটি প্রথম ডোজ দেওয়া হবে বলে আমরা আশা করি।’ 

ট্রাকশ্রমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন, সমিতিতে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই এখনো টিকা নেননি। তাঁদের টিকা দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সব শিল্পকারখানায় মোট আড়াই কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক প্রমুখ।

আগামীনিউজ/বুরহান 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে