ঢাকাঃ দেশের শিল্প ‘দুর্ঘটনার’ বাঁক বদল করে দেয়া আলোচিত তাজরীন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ডের ৯ বছর আজ বুধবার। ২০১২ সালের এই দিনে ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে ১১২ শ্রমিক নিহত হন। আহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। ওই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। নিম্ন আদালতে ওই মামলার বিচারকাজ দীর্ঘ সময়েও শেষ হয়নি।
দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও কারখানার ফটকে ফুল দিয়ে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন হতাহতদের স্বজন ও শ্রমিক নেতারা। আজ সকাল ৮টা থেকেই কারখানার প্রধান ফটকের সামনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতা তাসলিমা আক্তার। তিনি বলেন, সকালে আমরা ফুল দিব এবং প্রতিবাদ জানাব।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকেই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। কিন্তু শ্রম আইনের বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয়নি। সামান্য কিছু পরিবর্তন হয়েছে। সেটা দিয়ে নিহতের পরিবার বা আহতদের যে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে, তা এক ধরনের সহযোগিতা মাত্র। ক্ষতিপূরণ যথাযথ হয়নি বলে আমরা মনে করি। তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি, তাজরীন বা রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নিহতের পরিবারকে এক জীবনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই সময়ের আহতরা এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়দায়িত্ব নিতে সরকার বা মালিকপক্ষ কেউ এগিয়ে আসেনি।
তিনি বলেন, আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দরকার। তারা যাতে টিকে থাকতে পারে, এজন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। গত বছর প্রেস ক্লাবের সামনে দীর্ঘসময় ধরে অনশন করলে তাদেরকে নানা ধরনের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারও কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে দেলোয়ার হোসেন জামিনে বাইরে আছে। আমাদের দাবি, দেলোয়ারসহ যারাই দোষী, তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সূত্র জানিয়েছে, এখনো তাজরীনের ঘটনায় করা মামলায় সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়নি। তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেন ছয় মাস জেলে থাকার পর জামিনে মুক্ত। তার স্ত্রী এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার মিতাও জামিনে রয়েছেন। ৯ বছরেও তাজরীনের বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। রানা প্লাজা ও তাজরীনে আহতদের চিকিৎসা ট্রাস্ট ফান্ড নামে বেসরকারিভাবে একটি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৭২ জন এ ট্রাস্টে তালিকাভুক্ত। এর বাইরে আরো ৫০-এর অধিক ওই ঘটনায় আহত হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছেন। তবে তহবিলের অভাবে পুরোদমে চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আগামীনিউজ/নাসির