ঢাকাঃ ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে অন্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দেশে ডিজেলের মূল্য প্রতিবেশী দেশের চেয়ে কম এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। এই অজুহাতে অন্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিরও সুযোগ নেই।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে সম্প্রতি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ২০১৩ সালে দেশে ডিজেলের মূল্য ছিল লিটার প্রতি ৬৮ টাকা, পরবর্তীতে ২০১৬ সালে লিটার প্রতি ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়। এরপর সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধি হয়নি।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ডিজেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-বিপিসি ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হয় উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের জন্য বিপিসির লোকসান হয়েছে প্রায় এক হাজার ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। একইসঙ্গে ১ ডলারের মূল্য ২০১৬ সালের ৭৯ টাকা থেকে চলতি মাসে ৮৫.৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে, ফলে ডলারে মূল্য পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও জানান, ভারতে জ্বালানি তেলের মূল্য কমার পরও পশ্চিমবঙ্গে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৯০ রুপি বা ১০৪ টাকা, দিল্লিতে ৯৮.৪২ রুপি বা ১১৪ টাকার সমান। নেপালেও এই মূল্য ১১২.৩৯ রুপি বা ৮১ টাকা। প্রতিবেশী এসব দেশের চেয়ে আমাদের মূল্য কম রয়েছে। একারণে আবার চোরাকারবারিরা এখান থেকে প্রতিবেশী দেশে ডিজেল পাচার করছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার ক্রমাগতভাবে জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে আসছে এবং এদেশে দাম কম থাকায় বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যা রোধকল্পে এই মূল্যবৃদ্ধি এবং এনিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই। বাস্তবতার নিরিখে কথা বলা, সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় এবং এই অজুহাতে অন্য পণ্যের যেন মূল্যবৃদ্ধি না ঘটে সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখতে হবে, অন্যথায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
এসময় জ্বালানি তেলের মূল্য ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্য-উপাত্ত দেখে মন্তব্য করার জন্য মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাবো। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবসময় খানিক উত্তেজনা দেখা যায়। এরপরও আশেপাশের দেশের তুলনায় এখনও আমাদের দেশের নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণই বলতে হবে।
আগামীনিউজ/শরিফ