ঢাকাঃ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ২৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে দেশে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২০ হাজার ৯১৬ জনে।
রোববার (১ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৪৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮ জনে।
এর আগে শনিবার ২১৮, শুক্রবার ২১২, বৃহস্পতিবার ২৩৯, বুধবার ২৩৭, মঙ্গলবার ২৫৮, সোমবার ২৪৭ ও রোববার ২২৮ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৫৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৪৮১ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৪৯ হাজার ৫২৯টি। পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৭ লাখ ৯০ হাজার ৪২৩টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৯ জন পুরুষ এবং ৯২ জন নারী। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ১৪২ জন এবং নারী ৬ হাজার ৭৭৪ জন। এদের মধ্যে ১৩ জন বাসায় মারা গেছেন। আর বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৭৭ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৫৩, খুলনায় ৪৪, রাজশাহীতে ১৩, বরিশালে ৬, সিলেটে ৯, রংপুরে ১৮ ও ময়মনসিংহে ১১ জন মারা গেছেন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ১, ৮১ থেকে ৯০ বছরের ৯, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ৪৫, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ৭২, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৬, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৪, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৯, ২১ থেকে ৩০ বছরের তিন জন মারা গেছেন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় ২৩ জুলাই থেকে আবার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলবে।