ঢাকাঃ সম্প্রতি চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক হয় হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহার। ২০০৯ সালে মার্কিন দূতাবাস ও ভারতীয় হাইকমিশনে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই- তৈয়বার শীর্ষ নেতাদের সাথে তিনি গ্রেপ্তার হন।
শুধু দেশের মাটিতে নয়, হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির কয়েকজন নেতা ও তাদের পরিবারের রয়েছে বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা। এসব কারণে সফর করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানেও। পুলিশ বলছে, বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বা পাকিস্তান মডেলের রাষ্ট্র বানানোর অভিলাষ ছিল এসব হেফাজত নেতাদের।
হারুন ইজহারের মাদরাসায় বসে ১৯৯৯ সালের কবি শামসুর রাহমানের ওপর হামলার পরিকল্পনা করা হয় বলে জানায় হামলার অভিযোগে আটক হওয়া জঙ্গিরা। জঙ্গি সংগঠন-হুজি সম্পৃক্ততায় ২০১০ সালে গ্রেপ্তার হন হেফাজতের এই সাবেক নায়েবে আমির।
২০১০ সালের জঙ্গি সংগঠন হারকাতুল জিহাদের আমির ইয়াহিয়া জানান, ইজহারের মাদরাসাই সংগঠনের আঞ্চলিক শাখা খোলা হয়েছে।
২০১৩ সালের চট্টগ্রামে হারুন ইজহার পরিচালিত মাদরাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয় দুজন। উদ্ধার করা হয়, গ্রেনেডসহ বিপুল বিস্ফোরক।
এমনকি হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক তার ভগ্নিপতি নেয়ামতুল্লার মাধ্যমে পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এছাড়া পুলিশ বলছে, ২০০৫ সালে মামুনুল হক ও তার বোন একটানা ৪৫ দিন পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে বৈঠক করেন।
১৯৯৭ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বসনিয়ায় যুদ্ধ করার জন্য এক লাখ মুজাহিদকে ট্রেনিং দেওয়ার কথা জানান মামুনুল হকের বাবা আজিজুল হক। আরও লাখ লাখ যোদ্ধা পাঠানো হবে বলেও এসময় জানিয়েছিলেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, হেফাজত চায় সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে। আর তা সম্ভব হলে বাংলাদেশকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান মডেল বানানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে ধারণা তাদের।
এসব জঙ্গীরা যদি জামিনে বের হয় তবে আবারও নামে বেনামে তাদের তৎপরতা চালাবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।