Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইসির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০, ১২:০৪ এএম
ইসির বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়

ফাইল ছবি

ঢাকাঃ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) থেকে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা বাদ দেয়া, রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সময়সীমা উঠিয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে বর্তমান কমিশনের কড়া সমালোচনা করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) আলোচনা সভায়।

আজ বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর)  সুজন আয়োজিত অনলাইন গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা কমিশনের সমালোচনা করে নিবাচন কমিশনার নিয়োগে আইন প্রণয়নেরও দাবি জানান।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের কমিশন স্বাধীন। কিন্তু ইসি মিশ্র কমিশনের দিকে যাচ্ছে কি না সে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত কমিশন নিয়োগে আইন করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত জ্বি হুজুর কমিশন আসতে থাকবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা কেমন হবে, পদের নাম কী হবে এসব নির্ধারণ করার এখতিয়ার ইসির নেই। নির্বাচনী প্রক্রিয়া কেমন হবে সেটা তারা প্রস্তাব করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমি তথ্য পাচ্ছি জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পটি কমিশন সরকারের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে। এটি ভোটার  তালিকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এটা যদি সরকারকে হস্তান্তর করা হয় তাহলে কমিশনকে ভোটার তালিকার জন্য তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে। আর সেই ভোটার তালিকায় প্রকৃত ভোটার নয়, পছন্দ মত ভোটাররা স্থান পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ সময় তিনি প্রান্তিক পর্যায়ে স্থানীয় দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় এনে তাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া, দলের ব্যয় নীরিক্ষা, নিজেদের এখতিয়ারে ভোট পুনগণনার ক্ষমতা, নারী প্রার্থীদের ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে নির্বাহ করা এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সুপারিশ করেন।

সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিশন নিজেদের ক্ষমতাহীন করতে চাচ্ছে। কমিশনারদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তারা গাড়ি-বাড়ি ভোগ করবে, কিন্তু কাজ করবে না।

সুস্থ নির্বাচনে বাধ্য করা না গেলে এই ধরনের প্রক্রিয়া চলতে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পথ রুদ্ধ করতে হলে রাজনৈতিক দলসহ সকলকে সোচ্চার হতে হবে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আমরা সোচ্চার হওয়ার প্রবণতা দেখতে পাই না।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ইসির যে কাজ তাতে আইন সংস্কারের প্রস্তাব তার মূল কাজের মধ্যে পড়ে না। স্বপ্রণোদিত হয়ে আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া তাদের এখতিয়ার বহির্ভূত। তারা আইনের বিষয়ে মতামত দিতে পারে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নাম কী হবে, কাজ কী হবে তা ঠিক করা ইসির কাজ নয়। সুষ্ঠুভাবে নিজের যেটা কাজ সেটাই ইসি করতে পারে না।

সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে জনগণের ভোটাধিকার হনন করেছে। তারা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিজেদের স্থায়ীভাবে পঙ্গু করতে চাচ্ছে। ভবিষ্যতে একটি ভালো কমিশন পাওয়ার পথ রুদ্ধ করছে। তিনি বলেন, ইসি নিয়ে মানুষের বিস্তর সন্দেহ অবিশ্বাস আছে। তারা অনেক কিছুই গোপন করে। যা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দেয়। এখন তারা কাজের বদলে অকাজে লিপ্ত হয়েছে। যদিও সমালোচনার মুখে আইন সংস্কারের উদ্যোগ থেকে তারা সরে এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে, কিন্তু উদ্বেগ রয়েই যাচ্ছে। কারণ ইসির কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা, সততা, যোগ্যতা নেই। তারা কী কারসাজিতে যুক্ত তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল বলেন, অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারাখানা। ইসি নিজেকে ক্ষমতাহীন করতে চায়, পঙ্গু করতে চায়। কারণ তারা নিজেরা দায়িত্ব পালন করতে পারে না। এজন্য এখন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দায়মুক্তি নিতে চায়। বাড়ি, গাড়ি, বেতন ভাতাসসহ তারা সব সুবিধা ভোগ করতে চায়, কিন্তু নিজেদের দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চায়। তারা একটি বার্তা দিতে চেয়েছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছে দল ছাড়া। ২০১৮ সালে হয়েছে ভোটার ছাড়া। আগামী নির্বাচন করতে চায় ইসি ছাড়া।

সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের পরিচালনায় অনলাইন আলোচনায় আরো অংশ নেন বিচারপতি আবদুল মতিন, সিনিয়র সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সুজন নেতা আবু নাসের বখতিয়ার, সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

আগামীনিউজ/এএইচ 

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে