পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যারা আবশ্যকীয় সেবা প্রদান করছেন তাদের প্রতি সহনশীল হবার আহবান জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে শ্রমজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১ মে) এক ফেসবুক পোষ্টে তিনি এসব কথা বলেন।
পোষ্টে তিনি বলেন, "১ মে সারা বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পৃথিবীর সভ্যতার চাকাটা ঘূর্নায়মান রেখেছেন তাঁদের অবদানএর স্বীকৃতি এবং তাঁদের প্রতি সন্মান প্রদর্শনের দিন ১ মে। আমরা এই একবিংশ শতাব্দীতেও শ্রেনীসমাজেই বসবাস করছি যেখানে আমাদের অনেকের জীবনধারনের আরাম আয়েশ অন্যলোকের শ্রমের উপরেই মূলতঃ নির্ভরশীল।
আরো বলেন, সময়ের সাথে সাথে এদের আধিকার এবং মর্যাদাবোধের পরিবর্তন ও সম্প্রসারন ঘটেছে বটেই, তারপরেও তারা যে আর্থসামাজিক বৈষম্যের মধ্যে জীবনযাপন করতে বাধ্য হ'ন তার কোন সুষ্ঠু সুরাহা আমরা করে উঠতে পারি নাই। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমাজের নীচু তলার মানুষ বলে পরিচিতজনের মানবিক সমস্যাগুলির প্রতি ঔদাসীন্য ও অবহেলার সংস্কৃতি আরও প্রকটভাবে প্রশ্রয়প্রাপ্ত হয়েছে। তাদের সচেতনতাকে সহজভাবে গ্রহন না করে অন্যায় আবদার বলেও মনে করে থাকেন অধিকাংশ উঁচু তলার মানুষ। খুব বেশী হলে শ্রমিকের মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়াকে নিজেদের মাহাত্ব্য ও বদান্যতা বলে আত্মতুষ্টিতে ভোগেন।
১ মে তারিখে বছরে অন্ততঃ একবার আমরা এ বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে এবং কথা বলতে বাধ্য হই। এই সুযোগে এবারে বিশেষ করে কোভিড -১৯ মহামারির পরিস্থিতিতে যারা আমাদের আবশ্যকীয় সেবা প্রদান করছেন তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনের কথা ভাবতে পারি। এই কঠিন অসুখের প্রকোপের মধ্যে চুড়ান্ত ঝুঁকি নিয়ে যারা আমাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।
ইদানিং রোগীদের খুব সেবা প্রদান করেছেন এমন দু'জন সেবিকার একজনকে বাড়ীওয়ালা বাড়ী থেকে বের করে দিলেন এবং আর একজন সেবিকাকে মাটির ঝুপড়ি ঘরে আটকে রাখা হ'ল এমন দৃষ্টান্ত যেন আর দেখতে বা শুনতে না হয়। একই সাথে যারা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছুটা হলেও স্বাভাবিকত্বের স্পর্শ বাঁচিয়ে রেখেছেন সেই উৎপাদক শ্রেনী, পরিচ্ছন্ন কর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাধারন সদস্য, খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহকারী ও অন্যান্য সকল আবশ্যকীয় সেবাদান কর্মে নিয়োজিত পেশাজীবীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ১ মে কে কেন্দ্র করে আমরা যেন সকল মানুষের, বিশেষতঃ শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলা ও চর্চা করার প্রতিজ্ঞা নিতে পারি। "
আগামী নিউজ/ মিঠু/ তাওসিফ