ঢাকাঃ ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নড়াইলে একজন অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় কার কতটুকু গাফিলতি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এবং শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আকস্মিক অনেক ঘটনা ঘটে যায়, যেগুলো হঠাৎ করেই ঘটে। এই যে ঘটনাটা, এ জন্য আমরা সত্যিই দুঃখিত। একজন শিক্ষককে উত্তেজিত জনতা জুতার মালা পরিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে উত্তেজিত জনতা এতো বেশি ছিল, সেখানে ডিসি, এসপির কিছু করার আগেই ঘটনা ঘটে যায়। আসলেই এটা একটা দুঃখজনক ঘটনা।
নড়াইলের ঘটনায় পুলিশ উপস্থিত ছিল। সে ক্ষেত্রে পুলিশের দায় এড়াতে পরে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কেউ দায়িত্বে অবহেলা করলে সেটা পুলিশ করুক বা জেলা প্রশাসক করুক কিংবা জনপ্রতিনিধি করে থাকুক,
তদন্ত সাপেক্ষে তার বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই কার কতখানি গাফিলতি রয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখছি।
সাভারে এক শিক্ষককে হত্যার ঘটনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা আমাদের শিক্ষাগুরু, তাদের যদি নিজ স্কুলের ছাত্র হত্যা করে; এটা কতখানি নৈতিকতার অবক্ষয়, সেটা আপনারা নিজেরাই অনুমান করুন। আমাদের যেটা করণীয়, সেটা করেছি; তার বাবাকে ধরেছি। শিগগিরই তাকেও ধরে ফেলব এবং আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং রেজুলেশন করে জানিয়ে দিয়েছি, কোরবানির হাট হোক এবং মসজিদ হোক যেখানেই হোক, জনসমাগম যেখানে ঘটবে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ পালন করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দিয়েছে সেটা মেনে চলতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুন নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরিয়ে অপদস্ত করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের বহিষ্কৃত নেত্রী নুপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। এই বলে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে, ফেসবুকে পোস্ট করা শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এরপর পুলিশি পাহারায় বিকাল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল মানুষ। ওই শিক্ষক হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেওয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
এমবুইউ