Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মওলানা ভাসানীর ১৪২তম জন্মদিন


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২১, ১০:৩১ এএম
মওলানা ভাসানীর ১৪২তম জন্মদিন

ছবিঃ সংগৃহীত

কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪২তম জন্মদিন ১২ ডিসেম্বর, রোববার। ১৮৮০ সালের এই দিনে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে তার জন্ম।

হাজী শারাফত আলী ও বেগম শারাফত আলী দম্পতির সন্তান আবদুল হামিদ খান। ইসলামিক শিক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯০৭ সালে তিনি দেওবন্দ গিয়ে দুই বছর অধ্যয়নের পর আসামে ফিরে আসেন। ১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ময়মনসিংহ সফরে এলে তার ভাষণ শুনে অনুপ্রাণিত হন ভাসানী। ১৯১৯ সালে কংগ্রেসে যোগদানের পর খেলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ১০ মাস কারাভোগ করেন। ১৯২৬ সালে আসামে প্রথম কৃষক-প্রজা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান তিনি। ১৯২৯ সালে আসামের ধুবড়ী জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাসানচরে প্রথম কৃষক সম্মেলন করেন। এর পর থেকে তার নামের শেষে ভাসানী যুক্ত হয়।

১৯২৫ সালে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার জমিদার শামসুদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীর মেয়ে আলেমা খাতুন ভাসানীকে বিবাহ করেন। যিনি (পীর মা হিসেবে খ্যাত) তার বাবা পাঁচবিবির জমিদার কর্তৃক পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত সকল জমি মওলানা ভাসানীর জনকল্যাণমূলক কাজে (হক্কুল এবাদ মিশন) দান করেন। তার ২ কন্যা সন্তান এবং ২ ছেলে সন্তান ছিল।

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর  দ্বিতীয় সহধর্মিনী হামিদা খানম ভাসানী ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে বগুড়া জেলার আদমদিঘি থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাসেম উদ্দিন সরকার জমিদারশ্রেণিভুক্ত একজন সমাজ হিতৈষি ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছিলেন। অত্র এলাকায় কৃষক সংগঠনের রেশ ধরেই মওলানা ভাসানীর সাথে তার পরিচয়।
 
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে মত্যুবরণ করেন হামিদা খানম। তার একটি ছেলে সন্তান ও দুইটি কন্যা সন্তান ছিল।

দূরদর্শী রাজনীতিবিদ মওলানা ভাসানী ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম অগ্রনায়ক। কংগ্রেসের মাধ্যমে রাজনীতির সূচনা হলেও ১৯৩৭ সালে কংগ্রেস ছেড়ে মুসলিম লীগে যোগ দেন তিনি। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৯ সালে তিনিসহ অন্যদের প্রচেষ্টায় আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়, যা ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে। তবে মতবিরোধের কারণে মওলানা ভাসানী ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগ ছেড়ে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ নামে আলাদা দল গঠন করেন।

দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়ও তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। ১৯৭১ সালের মার্চেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান তিনি।

আজীবন শ্রমিক-কৃষক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন মওলানা ভাসানী। ১৯৩১ সালে সন্তোষের কাগমারী, ১৯৩২ সালে সিরাজগঞ্জের কাওরাখোলা এবং ১৯৩৩ সালে গাইবান্ধায় বিশাল কৃষক সম্মেলন করেন তিনি। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে ১৯৭৬ সালে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে ঐতিহাসিক লংমার্চ করেও স্মরণীয় হয়ে আছেন। 

১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর এই দেশবরেণ্য নেতা মারা যান।

ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাকে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। ২০০৪ সালে বিবিসি জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি তালিকায় তিনি ৮ম হন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার স্কুল পাঠ্যক্রমগুলিতে তার উপস্থিতি হ্রাস করে।

দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে আছে- মওলানা ভাসানীর কবর ও প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা প্রভৃতি।

আগামীনিউজ/নাসির

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে