ঢাকাঃ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আরটি-পিসিআর ল্যাবগুলোর এখনও অনুমোদন দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দেশটি অনুমোদন দিলেই বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রবাসীকর্মী ও যাত্রীদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে ছয়টি আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এখনও তার অনুমোদন দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত। ফলে সেখানে প্রবাসীদের করোনা পরীক্ষা শুরু করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরে ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। ওইদিনই আমরা রিপোর্টও পেয়েছি, সেগুলো আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। তারা যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে পিসিআর পরীক্ষার শর্ত দিয়েছিল, তাদের অ্যাপ্রুভাল (অনুমোদন) লাগবে। তারা অনুমোদন এখন পর্যন্ত দেয়নি। তবে চেষ্টা চলছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে করোনার জন্য পিসিআর পরীক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে আরটি-পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম পুরোদমে শুরুর আশাবাদ জানিয়েছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তার নেতৃত্বে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কারণে দেশের গ্রামীণ আর্থসামাজিক অবস্থার হয়েছে উন্নয়ন। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনীতির ভিত শক্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ থেকে এসডিজি প্রগ্রেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এর আগেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। এটি জাতির জন্য গর্বের। দেশের এই অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হতে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মো. মাহবুব আলী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসহ দেশের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অধিকতর যাত্রীসেবা নিশ্চিতে উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। কোভিড-১৯ এর মধ্যেও একদিনের জন্যও বিমানবন্দরের উন্নয়নকাজ থেমে থাকেনি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায় ও আগ্রহে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহর সমৃদ্ধ হয়েছে বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির আধুনিক সব উড়োজাহাজে। এছাড়া পর্যটনের গুণগত মান উন্নয়নে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নসহ নানা উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হান্নান মিয়া, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও জাবেদ আহমেদ, বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মো. আব্দুল কাইয়ুম, হোটেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. আমিনুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও অধীন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।