ঢাকাঃ দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছে ২৪৭ জন। এর আগে গত ১৯ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ২৩১ জনের মৃত্যুর রেকর্ড ছিল। এ নিয়ে দেশে করোনায় মারা গেলেন ১৯ হাজার ৫২১ জন।
২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ১৯২ জন। এটিও এক দিনে দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৭ জনে। এর আগে গত ১৩ জুলাই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৭৬৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন।
সোমবার (২৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে রোববার ২২৮, শনিবার ১৯৫, শুক্রবার ১৬৬, বৃহস্পতিবার ১৮৭, বুধবার ১৭৩ ও মঙ্গলবার ২০০ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৫২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৯২৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৯৫২টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৫ লাখ ৬ হাজার ২৩৩টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৭২ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৭২ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৬১, রাজশাহীতে ২১, খুলনায় ৪৬, বরিশালে ১২, সিলেটে ১৪, রংপুরে ১৬ এবং ময়মনসিংহে ৫ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৪১ জন পুরুষ এবং ১০৬ জন নারী। এদের মধ্যে ২৬ জন বাসায় মারা গেছেন। ১ জনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার৩৪০ জন এবং নারী ৬ হাজার ১৮১ জন।বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১৩৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫৯, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩০, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৬, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৩ এবং ১১ থেকে ২০ বছরের ২ জন মারা গেছেন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় ২৩ জুলাই থেকে আবার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলবে।