Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আজ থেকে‌ শুরু ‘কঠোর লকডাউন’, মাঠে থাকবেন ১০৬ ম্যাজিস্ট্রেট


আগামী নিউজ | ‍নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২১, ০৮:৫০ এএম
আজ থেকে‌ শুরু ‘কঠোর লকডাউন’, মাঠে থাকবেন ১০৬ ম্যাজিস্ট্রেট

ঢাকাঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। এ সময় সব যাত্রীবাহী যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। পুলিশ জানিয়েছে, যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে গেলেই গ্রেফতার করা হবে। এ সাত দিন সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সব অফিস বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে বিপণিবিতান, মার্কেট, শপিং মল ও দোকানপাট। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু থাকবে ব্যাংক ও শিল্পকারখানা।

বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সারা দেশে মোতায়েন থাকবেন। রাস্তায় টহল দেবেন বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশের সদস্যরা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ মানুষের চলাচলে ‘বিধিনিষেধ’ আরোপ করে ২১ দফা নির্দেশনা দিয়ে ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। করোনা সংক্রমণ রোধে চলাচল নিয়ন্ত্রণে এটি সরকারের ১১তম প্রজ্ঞাপন। নতুন বিধিনিষেধে খোলা থাকবে তৈরি পোশাক কারখানা ও বাণিজ্যিক ব্যাংক।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনা-বিজিবি-পুলিশ-র‌্যাব ও আনসার নিয়োগ এবং টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগসমূহ এ বিষয়ে মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। সরকারের এ বিধিনিষেধ ঘোষণার কার্যকাল প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গতকাল সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি।

যা কিছু বন্ধ থাকবেঃ এর আগে করোনা সংক্রমণ রোধে আজ ১ জুলাই থেকে সাত দিনের সরকারি ‘বিধিনিষেধ’ বা ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। ওই সাত দিন সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌ পথে পরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিং মল/মার্কেটসহ সব দোকান বন্ধ থাকবে। সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

যা খোলা থাকবেঃ নতুন বিধিনিষেধে খোলা থাকবে পোশাক কারখানা, ব্যাংক। আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি, ফার্মাসিউটিক্যালসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবেন।

কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন/বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। অতি জরুরি ছাড়া (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান/কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, রেল ও স্থল) এবং সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা দেওয়ার জন্য যাতায়াত করা যাবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

১০৬ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মাঠে থাকছে ভ্রাম্যমাণ আদালত : করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১০৬ জন কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

নির্বাহী বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা আজ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ আদেশ জারি করে। ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’, ১৮৯৮ এর ১০(৫) ধারা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর ৫ ধারা অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের আওতাধীন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে