ঢাকাঃ সারা দেশে বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরীতে ৪ হাজার ৫৭০টি শিল্প ইউনিটে অব্যাহতভাবে চলছে পণ্য উৎপাদন। এসব কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি পরিদর্শন করছে মনিটরিং টিম।
দেশে চিকিৎসাকাজে ব্যবহৃত অক্সিজেন তৈরি করে যে চারটি প্রতিষ্ঠান, তার একটির অবস্থান টাঙ্গাইলের তারটিয়ায়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীর ভিতরে। মেসার্স বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেড নামের এই প্রতিষ্ঠান লকডাউনের মধ্যেও অব্যাহত রেখেছে তাদের উৎপাদন।
শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, লকডাউনে সারা দেশে বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরীর সবগুলোই চালু রাখা হয়েছে, যাতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে করোনা প্রতিরোধমূলক সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের উৎপাদন কার্যক্রম ঠিক থাকে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস লিমিটেডের ওই কারখানায় প্রতিদিন ১০ হাজার ঘনফুট মেডিক্যাল অক্সিজেন উৎপাদিত হচ্ছে, যা টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, গাজীপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিসিক শিল্পনগরীগুলোতে পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার ও ফ্লোর ক্লিনার ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে প্লাস্টিকজাত ও অ্যালুমিনিয়াম তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
এসব শিল্পনগরীতে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রতিটি জেলায় মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিসিক জেলা কার্যালয় ও শিল্পনগরীসমূহের কর্মকর্তা এবং শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং টিম উৎপাদনরত শিল্পকারখানাগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।
বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরীতে উৎপাদনরত শিল্প ইউনিট রয়েছে ৪ হাজার ৫৭০টি এবং এসব শিল্প ইউনিটে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৬৩ হাজার ৩১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্প ইউনিট সংখ্যা ৯০১টি।
বিসিক শিল্পনগরীসমূহে উৎপাদিত পণ্যের বাৎসরিক বাজার মূল্য প্রায় ২ লাখ ১৭ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। রপ্তানিমুখী পণ্যের বাৎসরিক বাজারমূল্য প্রায় ৩২ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
বিসিক শিল্পনগরীসমূহে প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯৭ জন নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিসিক শিল্পনগরীগুলো থেকে ভ্যাট ও ট্যাক্সবাবদ সরকার প্রায় ১৩ কোটি ৩৬৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় করে।
বিসিক শিল্পনগরীতে শিল্প স্থাপন করে যেসব প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ শিল্পে পরিণত হয়েছে, তাদের মধ্যে আছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রাণ-আরএফএল, বিআরবি ক্যাবলস, হ্যামকো ব্যাটারিজ, নিট/তৈরি পোশাক শিল্প, স্পিনিং শিল্প, ফকির অ্যাপারেল, ওয়েল ফ্যাশন, ন্যাশনাল ফ্যান ইন্ড্রাস্ট্রিজ, রাজশাহী সিল্ক, ফরচুন সুজ, আলীম অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্লোব ইন্ডাস্ট্রিজ, ওয়ান ফার্মা, জেনিথ ফার্মা, কিয়াম মেটাল, ফুলকলি, বনফুল লাভ ক্যান্ডি, মেরিডিয়ান চিপস ও বেঙ্গল বিস্কুট।
আগামীনিউজ/প্রভাত