ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ হাটহাজারীসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে হেফজাতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হেফাজতের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন তিনি।
আইজিপি বলেন, আমরা দেখছি প্রায় প্রতিবছরই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমন ন্যাক্কারজনক হামলা ঘটছে। একইভাবে হাটহাজারীতেও হামলা হচ্ছে। বারবার রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে। বারবার কেন রাষ্ট্রীয় সম্পতির ওপর আঘাত করা হচ্ছে? অবস্থানটা কী বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে?
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, ১৮ কোটি বাংলাদেশি আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। একসঙ্গে আমরা ভয়কে অতিক্রম করতে পারব। কোনও বিশেষ গোষ্ঠী কোনও একটি অঞ্চলকে উপদ্রুত এলাকা হিসেবে পরিণত করবে- এটা হতে দিব না।
পুলিশপ্রধান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানুষের নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে ঘুমানোর অধিকার আছে। এই অধিকার আমরা নিশ্চিত করব। যারা যার কাছে হামলার ভিডিও ও ছবি আছে তারা যেন তা পুলিশকে সরবরাহ করে। মামলা করেন, আমরা ব্যবস্থা নেব।
তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে আমাদের কী অর্জন তাহলে! বারবার সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এভাবে হামলা করছে, ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে।
আইজিপি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭৪টি মাদ্রসা রয়েছে। এখানে ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। দিনে একজন শিক্ষার্থীর পেছনে একশ' টাকা খরচ হলে বছরে ৩৫০ কোটি খরচ হয় এসব মাদ্রাসায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, এই খরচ আপনারাই দিচ্ছেন। দ্বীনের খেদমতের জন্য দিচ্ছেন। আসলেই তারা দ্বীনের খেদমত করছেন? বারবার তারা সহিংসতার ঘটনা ঘটাচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হাটহাজারীতে ভূমি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫০ বছরেও এই রেকর্ড ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার হবে কিনা সংশয় রয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে ভুগতে হবে।
পুলিশপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ঐহিত্যগতভাবে যার যার ধর্ম পালন করে থাকে। ধর্ম ব্যবসায়ী যারা, তাদের দুটি চরিত্র রয়েছে। তারা ওয়াজও করেন, আবার লাঠি নিয়ে মিছিলও করেন। আমাদের এখনই প্রকৃত ধার্মিক লোক ও ধর্ম ব্যবসায়ী- এই দুই শ্রেণির পার্থক্য বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, অনেক হুজুরের গাড়ি দেখেন, তারা গাড়ি কেনার টাকা পান কোথায়। দ্বীনের জন্য টাকা দেব, ধর্ম ব্যবসার জন্য টাকা দেব না। সাহস রাখবেন, ধৈর্য হারাবেন না।
র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (মিডিয়া) হায়দার আলীসহ উচ্চ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আগামীনিউজ/সোহেল