Dr. Neem on Daraz
Victory Day

উৎসবের আমেজ এখন পদ্মা পাড়ে


আগামী নিউজ | অনিক শিকদার প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২০, ১২:০৬ পিএম
উৎসবের আমেজ এখন পদ্মা পাড়ে

ছবি: আগামী নিউজ

পদ্মা পাড় থেকেঃ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল সেতুর নির্মাণকাজ।  আর সেই সেতুটি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পাচ্ছে পূর্ণতা। দৃশ্যমান হবে নকশানুযায়ী পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ অংশ। মানে ৬ দশমিক ১৫ মিটার। এ যেন বিজয়ের মাসে আরেক বিজয়, তাই উৎসবের আমেজ এখন পদ্মা পাড়ে।

সর্বশেষ স্প্যানটি পিলারে তোলার অপেক্ষা মাত্র। পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা পিলারগুলোতে স্বপ্ন জোড়া লাগতে পারে আজ বৃহস্পতিবার।

পদ্মা সেতুতে এখন স্প্যান বসানো বাকি আছে মাত্র একটি। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ স্প্যানটি বসিয়ে দেয়া গেলেই পুরো সেতু দৃশ্যমান হবে। সাঙ্গো হবে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার।

মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে কয়েক দিন ধরে প্রস্তুত হয়ে আছে শেষ স্প্যান টু-এফ। শেষ স্প্যানের দুপাশে রয়েছে বাংলাদেশ ও চীনের পতাকা। সঙ্গে দুদেশের সম্পর্ক অটুট রাখারও বার্তা।

আর স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান-ই’। শেষ স্প্যানটি বসানো নিয়ে এখন আলোচনা চলছে সর্বত্র। এ বিশাল কর্মযজ্ঞে দেশি-বিদেশি ২০ হাজার প্রকৌশলী, শ্রমিকদের মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রম জড়িত। কাজ শুরুর দিকে নানা অনিশ্চিয়তা থাকা সত্ত্বেও সেতুর কাজ এগিয়ে যাওয়ায় জেলাবাসীসহ দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, শ্রমিকদের মধ্যে বইছে উৎসবমুখর একটি পরিবেশ।

৪০ স্প্যান বসানোর অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে বসবে এ স্প্যানটিও। স্প্যান বসানো শেষ হলে রেলওয়ে ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর গতি বৃদ্ধিতে মনোযোগী হবেন তারা।

পদ্মা সেতুর যাত্রাপথ সহজ ছিল না। বলা হয় দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনের পর সবচেয়ে খরস্রোতা নদী পদ্মা। প্রতিটি কাজে প্রকৃতির বিরূপ আচরণ মোকাবেলা করতে হয়েছে। তাই ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বের প্রথম স্প্যান বসলেও পুরো ৪১টি শেষ করতে লাগল তিন বছর তিন মাস।

এর আগে ২০১৪ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল পদ্মা সেতুর। শুরুতে একেকটি স্প্যান বসাতে সময় লেগেছিল কয়েক মাস। তবে গত দুই মাসে আটটি স্প্যান ও এ মাসে একটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে প্রকৌশলীরা কাজের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।

ভরা বর্ষায় তীব্র স্রোত মোকাবেলা করে পাইলিং করতে হয়েছে। আবার শীতে অত্যধিক পলি অপসারণ করতে দিনরাত কাজ করেছে ড্রেজার। মাটির তলদেশের গঠনগত ভিন্নতার কারণে পাইলিং লেগেছে অতিরিক্ত আট মাস।

এ কারণে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সেতু চালুর টার্গেট থাকলেও পূরণ হয়নি। এর ওপর করোনার কারণে অগ্রগতি কমেছে আরও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। এখন চলছে দুই পিলারের ওপর স্প্যান স্থাপনের জন্য কারিগরি কাজ।

প্রমত্তা পদ্মায় ৬ হাজার ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু গড়বে বাংলাদেশের একটি নতুন দিগন্ত। বিজয়ের মাসে সেতুতে শেষ স্প্যানটি বসিয়ে পদ্মা জয় করবে পদ্মা সেতুটি। স্বপ্ন পূরণের খুব কাছাকাছি নদীর প্রবহমান জলরাশির ওপর পুরো পদ্মা সেতু। দূর থেকেই দেখা যায় সেতুর মাঝের শূন্যস্থানটুকু। অপেক্ষা আর মাত্র একটি স্প্যানের। অনুকূল আবহাওয়া আর টার্গেট অনুযায়ী প্রস্তুতি শেষ হলে সেটিরও অবসান হতে যাচ্ছে আজ।

পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর কাজে জড়িত কয়েকজন প্রকৌশলী সাংবাদিকদের জানান, দুই পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর জন্য কারিগরি কাজগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে।

কয়েকটি ধাপ শেষ হলেই স্প্যান বসানোর জন্য উপযোগী হবে। আর এ জন্য ইয়ার্ডে প্রস্তুত আছে শেষ স্প্যানটিও। স্প্যান বসানো শেষ হলে বাকি থাকবে অ্যাপ্রোচ রোড, রেললাইন ও রোডওয়ে ডেক স্থাপন।

এখন সব স্প্যান বসলে সেতু দাঁড়িয়ে যাবে। সেতুর অ্যাপ্রোচওয়ের কাজ চলছে। সেতুর সঙ্গে রাস্তার সংযোগ করতে সেতুতে ওঠার মুখে গার্ডারগুলো বসানো হচ্ছে।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে