ঢাকাঃ রাজশাহীর গরিব ঘরের মেধাবী ছাত্রী সাদিকা ইয়াসমিন বৃষ্টি। জেলার বাঘা উপজেলার হাজিপাড়া গ্রামের দিনমজুর শহীদুল ইসলামের মেয়ে তিনি।
এমবিবিএস পরীক্ষায় এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। খবর শোনার পর আনন্দের বন্যা বয়ে যায় বৃষ্টির পরিবারে। কিন্তু সেই আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হতে যাচ্ছে।
দারিদ্র্যতার কারণে তার চিকিৎসক হওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তার বাবা-মা। বৃষ্টির চোখেমুখে এখন শুধু হতাশা।
জন্মের পর থেকেই জীবনের সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্ত লড়াই করে চলেছেন বৃষ্টি। তবুও লেখাপড়ার হাল ছাড়েনি সে। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে ঘিরেই সংগ্রাম করে যাচ্ছে। নিজের চেষ্টায় এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় প্রথম হয়েছে। এইচএসসিতে জিপিএ গোল্ডেন পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সাদিকা।
বৃষ্টির বড়ভাইয়ের আয়ে সংসার চলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বৃষ্টি ছোট।বৃষ্টির বাবা শহীদুল ইসলাম একজন দিনমজুর ও মা নাসিমা বেগম গৃহিণী। অভাবের কারণে বড়ভাই নাসির ও বোন হাসিকে পড়ালেখা করাতে পারেনি পরিবার। তবে জমি বলতে শুধু বসতবাড়ি।
কিন্তু অর্থাভাবে সেই আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে বৃষ্টির। ভবিষ্যত তার অনিশ্চিত।
বৃষ্টির বাবা জানান, মেয়ে মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে শুনে আমি খুশি। মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আগে থেকেই ছিল। স্বপ্ন আজ স্বার্থক হওয়ার পথে কিন্তু ভর্তির টাকা জোগাড় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
স্কুলজীবন থেকে শুরু করে সব পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করা বৃষ্টি ডাক্তার হয়ে গরিব অসহায়দের সেবা করতে চায়। বর্তমানে কারও কাছে একটু আর্থিক সহযোগিতা পেলে হাসি ফুটবে বৃষ্টির মুখে।
সাদিকা ইয়াসমিন বৃষ্টি বলেন, প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি। পাশাপাশি প্রতিবেশী ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট পড়িয়েছি। আবার কখনও কখনও মায়ের সঙ্গে হাতের কাজ করেছি। এই আয় থেকে নিজের পড়ালেখা খরচের পাশাপাশি সংসারের খরচ করেছি।
মনিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় প্রথম, এইচএসসিতে জিপিএ গোল্ডেন এবং মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পেয়েছে বৃষ্টি। দিনমজুর পরিবার থেকে অর্থের জোগান দিয়ে মেডিকেলে পড়ানো এই পরিবারের পক্ষে খুব কঠিন।
সমাজের শিক্ষানুরাগী সুহৃদয় ব্যক্তিদের সহযোগিতাই এখন শুধু পারে তার ডাক্তার হওয়ার পথ নিশ্চিত করতে।
আগামীনিউজ/জনী