ঢাকা : মিরপুর টেস্টের নিয়ন্ত্রণে নিজেদের অধীনে রেখে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সেই ধারা অব্যাহত রেখে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আগের দিন ৭১ রানে অপরাজিত থাকা মুমিনুল হক। মধ্যাহ্ন বিরতি পরেই ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৪০ রান সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। দিনের প্রথম শেসনেই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুমিনুল হক। এটি তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে নবম সেঞ্চুরি। তবে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম।
অধিনায়কের পর সেঞ্চুরির একেবারে নিকটে পৌঁছে গেছেন মুশফিকুর রহিমও। ৯৯ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ বিরিতি যান অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। বিরতি থেকে ফিরেই শতক তুলে নেন মুশফিক। ১০১তম ওভারের তৃতীয় বলে চার মেরে ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। মুমিনুল আর মুশফিকের রসায়নে বড় লিডের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
এই প্রতিবেদন লিখার সময় ১০১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৫৮ রান। ৯৩ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। মুমিনুল হক ১২১ এবং মুশফিকুর ১০৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ২৬৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাইফের বিদায়ে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে স্বাগতিকরা। চা বিরতির আগে শান্ত ফিফটি তুলে নিলেও বিদায় নেন তামিম। ফিফটিটাকে ৭১ রান অবধি নিয়ে যেতে পেরেছেন শান্ত। নিজের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৩৯ বলে সাতটি চারের সাহায্যে। এরপর বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। সঙ্গী হিসেবে পান অভিজ্ঞ মুশফিকুরকে। ১৭২ রানে ৩ উইকেট চলে যাওয়ার পর এই জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় দিন পার করেছে। যেখানে মুমিনুল ৭১ করে অপরাজিত আছেন। তিনি এই রান করেছেন ১৩৯ বলে সাতটি চারের সৌজন্যে। মুশফিকের ৩২ রান এসেছে ৬৮ বলে ছয়টি চারের সাহায্যে।
ইনিংসের শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে নিয়াওচির বলে খোঁচা মারতে গিয়ে রেগিস চাকাভার তালুবন্দি হয়েছেন সাইফ হাসান। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন নাজমুল শান্ত ও তামিম ইকবাল। দুজনেই ফিফটির পথে এগোচ্ছিলেন। ৮৯ বলে ৪১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ত্রিপানোর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন এই ওপেনার।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ৩৭ রান যোগ করতে সমর্থ হয় জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৫ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে রেগিস চকাভাকে (৩০) শিকার করেন তাইজুল ইসলাম। পেসার আবু জায়েদ ও স্পিনার নাঈম হাসান ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ২টি শিকার করেন তাইজুল।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে জিম্বাবুয়েকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিয়েছেন প্রিন্স মাসভুরে ও অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। স্কোরবোর্ডে ৭ রান উঠকেই ওপেনার কেভিন কাসুজাকে (২) ফিরিয়েছেন আবু জায়েদ। চাপে পড়ে যাওয়া জিম্বাবুয়েকে উদ্ধার করেছে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। মাসুভুরে ও আরভিন মিলে যোগ করেন ১১১ রান। এরপরই আঘাত হানেন নাঈম হাসান। কট অ্যান্ড বোল্ড করে ফেরত পাঠান মাসভুরেকে। তার আগেই ফিফটি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। ১৫২ বলে নয়টি চারের সৌজন্যে করেছেন ৬৪ রান।
এরপর তৃতীয় আঘাতটিও হেনেছেন নাঈম। বোল্ড করে ফিরিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলরকে (১০)। অবশ্য সিকান্দার রাজার সঙ্গে আরভিনের জুটি বড় হতে দেননি সেই নাঈমই। রাজাকে ফিরিয়েছেন লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে। তার আগে তিনি ৬২ বল খেলে করেছেন ১৮ রান। একপ্রান্ত আরভিন আগলে রাখলেও অন্যপ্রান্ত থেকে তেমন সঙ্গ পাননি। মারুমাকে এলবিডব্লুয়ের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেছেন আবু জায়েদ।
এর মাঝেই ক্যারিয়ারের তিন নম্বর সেঞ্চুরি তুলে নেন আরভিন। ২২৭ বলে তিনি ১০৭ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১৩টি চারের সৌজন্যে।
আগামীনিউজ/জাকিউল