1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

স্বাস্থ্যঝুঁকির দায় কার? আমাদের না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের?

ড্যানি বিশ্বাস প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০, ০৬:৩০ পিএম স্বাস্থ্যঝুঁকির দায় কার? আমাদের না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের?
প্রতীকী ছবি

বলা হয়, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। সবাই ছোটবেলা থেকেই জানে কথাটা। বাংলাদেশের সরকারী কর্মকর্তারাও নিশ্চয়ই পড়েছেন। তারা তো উচ্চশিক্ষিত হয়েই যোগদান করেছেন চাকরিতে। তবে অন্যান্য অনেক দপ্তরের মত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব খবর দেশবাসী জেনেছে, তাতে মনে হয়, চাকরি পেয়ে তারা সেই স্বাস্থ্যের বাণীটা শুধু নিজের ক্ষেত্রেই মনে রেখেছেন। ভুলে গেছেন অন্য সব মানুষের কথা। সেই- নিজে বাঁচলে বাপের নাম- কথাটাকেই বোধহয় তারা আঁকড়ে ধরেছেন শক্ত করে। যদিও সেরকম কোন বিপদে তারা পড়েননি। আর হাবিজাবি কথা না বলে এবার একটু ঝেরে কাশিঃ

করনা! হঠাৎ করেই একটা শব্দ সারা পৃথিবীর মানুষকে সতর্ক করে ফেলল। চিনের উহান শহরে দেখা দিয়েছে নতুন এক ভাইরাস, তাতে মারা যাচ্ছে মানুষ। এক দুই থেকে শত শততে। চিন বা উহানপ্রবাসীরা হয়তো মনে করল, বাবা, ভাইরাস থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি দেশে যাই। হুরহুর করে মানুষ আসল দেশে। শুধু উহান না, আরেক আক্রান্ত দেশ ইতালি থেকেও এল। আর তক্ষুনি শুরু হয়ে গেল হ য ব র ল। বিদেশ ফেরতদের করোনা পরীক্ষা ছাড়াই ঢুকতে দিল সরকার। সেটাই ছিল সরকারের প্রথম ভুল। এক দুই করে বাড়ল আক্রান্ত। হঠাৎ করে একজন মরেও গেল। তারপর আর থামল না। বাড়তেই থাকল মৃত্যু। সরকারেরও টনক নড়ল ভাল করেই। তবে স্বাভাবিকভাবেই যেহতু স্বাস্থ্য নিয়ে কথা, এই পরিস্থিতি মোকাবেলার দায়িত্ব পড়ল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে। এর পরেই বলতে গেলে বাংলাদেশের চিরায়ত রুপে দেখা দিল সেই অধিদপ্তরের কর্মকান্ড। অনিয়ম আর অনিয়ম।

পরিস্থিতি যখন খুবই ভয়াবহ, করনা ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণে অথচ চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নাই, যা নিয়ে তাঁরা রোগীর কাছে যাবে। দেশে দেখা দিল ভয়াবহ এক সংকট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জবাব বা বক্তব্যহীন! সেই অবস্থায় কেটে গেল অনেক দিন। অবশেষে এল স্বস্তিকর সংবাদঃ- মাস্ক আসছে! পিপিই আসছে! জগতের সবচেয়ে মূল্যবান ব্যবহারিক জিনিস তখন এই দুইটি। ডাক্তাররা ভরসা পেল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানাল একটি মাস্কের নাম। N95। করনা ঠেকাতে সবচেয়ে সেরা মাস্ক। ৯৫ শতাংশ ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাস রোধ করতে পারে এই মাস্ক। ইতালি-চিনের হাসপাতালগুলোর ডাক্তাররা এই মাস্ক ব্যবহার করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জরুরীভাবে সেই মাস্কই পাঠাল দেশের হাসপাতালগুলোয়। কিন্তু ডাক্তাররা যদি তাদের জিনিস ধরেই না বুঝতে পারে যে সেটা আসল না নকল, তাহলে কী হয়? সবগুলোই দেশে তৈরি মাস্ক! যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর N95 মাস্ক বলে হাসপাতালগুলোতে পাঠিয়েছে। হায়, শুধু কি মাস্কই, পিপিইটা পর্যন্ত ভূয়া! অথচ এমন কথা ছিল না। আমেরিকার ডাক্তাররা যে পিপিই ব্যবহার করে আমাদের দেশের যোদ্ধাদেরও পাওয়ার কথা ছিল সেই পিপিই। অর্থাৎ মৃত্যুঝুকি থেকেই গেল তাঁদের। এর মধ্যে হাস্যকর ব্যাপারও হয়ে গেল। একটা ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গেল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিপিই পরা সরকারী কর্মচারীরা, স্বয়ং তাদের অফিসে। ওদিকে কিন্তু পিপিই সংকটে অনেক হাস্পাতালে ডাক্তাররা চিকিৎসায় যেতে ভয় পাচ্ছেন, রোগীরা ভুগছে।

হায়, শুধু এতেই তো শেষ না, জানা কথা আর কত বলব, করনার ভূয়া সার্টিফিকেট দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত ল্যাব। জেকেজি ও রিজেন্ট এর মধ্যে দুটি বড় নাম। প্রথমে শুধু ICCDRB করত সেই পরীক্ষা। পরে ৮0টি ল্যাব ও হাসপাতালকে দেওয়া হল সেই পরীক্ষার অনুমোদন। সেখানে আরও বড় অনিয়মের সুযোগ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা লুফে নিলেন। এমন ল্যাবকেও পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যেখানে করনার পরীক্ষার মেশিনই নাই। এ-সব খবর মানুষের জানা।

সেসময় টিভি পর্দায় আমরা দেখতে পেয়েছি, করনা না, অন্য রোগী নিয়ে এম্বুলেন্সে অথবা সিএনজিতে এক সরকারি হাসপাতাল থেকে আরেক সরকারি হাসপাতালে ঘুরেছে স্বজনরা। কোথাও ভর্তির উপায় নাই। করনা থাকতে পারে- সেই আশঙ্কায় কেউ ভর্তি নিচ্ছে না। অবশেষে মরে গেছে সেই রোগী।
এমন অবস্থায় সহজেই অনুমেয় যে, মানুষ দেশের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি কতটা ভীতির চোখে অবলোকন করেছে আর করছে।     

এখন কথা হচ্ছে এসব জানা কথা লিখে লাভ কী? কেনই লিখলাম এত কথা? হ্যাঁ, নিজেরও কিছু কথা আছে বলেই। নিজের বলতে সারা দেশের মানুষের কথাই। প্রতিদিনের করনা আপডেটে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে উপস্থিত থেকেছেন স্বয়ং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ। রিজেন্ট হাসপাতালকে করনা পরীক্ষা করার অনুমোদনের কাগজে তারই স্বাক্ষর ছিল। সেই জেরে তিনি চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। যাই হোক, এক দিক দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আমাদেরকে উপদেশ দিয়েছে আর অন্যদিক দিয়ে করে গেছে অনিয়ম। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসেছে, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের অভিভাবকের কর্মকাণ্ডই যদি সবচেয়ে গুরুত্বর ব্যাপারে এমন নিয়মহীন হয়, তাহলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বা মৃত্যুঝুঁকির জন্য দায়ী কারা? মানুষ নাকি তারা?

আগামীনিউজ/ড্যানি

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner