1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

অধিক উৎপাদনশীল মাছ চাষে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতি

তরিকুল ইসলাম সুমন প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২০, ০১:২১ পিএম অধিক উৎপাদনশীল মাছ চাষে হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতি
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: ক্রমবর্ধমান চাহিদার সারা বিশ্বে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে বাংলাদেশ।দেশে উৎপাদিত মাছের অধিকাংশই দ্রুত বর্ধনশীল বিদেশী মাছ। এখন বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করছেন মাছ চাষিরা। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও চীনের উদ্ভাবিত মাছের জাত এখন বাংলাদেশের সাফল্য বয়ে আনলেও দেশিয় প্রজাতির নিয়ে চোখে পরার মতো কোনো কাজ নেই।

বাংলাদেশে বিদেশী ও হাইব্রিড মাছ চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে । তেলাপিয়া, স্কেল কার্প, গ্রাস কার্প, সিলভার কার্প, থাই সরপুঁটি , মিরর কার্প, বিগহেড কার্প, ব্ল্যাক কার্প, আফ্রিকান মাগুর, থাই পাঙ্গাস , নাইলোটিকা , মিনার কার্প , মনোসেক্স তেলাপিয়া, মনোসেক্স স্কেল কার্প, রেড তেলাপিয়া, মিল্ক ফিস, গোল্ড ফিস ,গুরামি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশী মাছ এপর্যন্ত বাংলাদেশে এসেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, কোনো অবস্থাতেই বিদেশী কোনো প্রজাতির মাছ দেশে আনা ঠিক নয়। এ বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা বা পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন। অতীতে দেশে  গবেষণা ছাড়াও  অনেক মাছ এসেছে। অনেক প্রজাতির মাছ আবার চাষাবাদ বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশে নতুন করে আর বিদেশী মাছ আনা সহজ নয়। এ বিষয়ে সরকার একটি আইন করেছে এর ফলে অনুমোদন ছাড়া কোনো বিদেশী দেশে আনা সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, বিদেশী প্রজাতীর মাছ চাষাবাদের কারণে আমাদের দেশীয় প্রজাতি কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এ নিয়ে দেশে কোনো গবেষণা নেই। দেশের মুক্ত জলাশয় হাওর-বাওড়ে এখন দেশীয় প্রজাতির কি অবস্থা সেটা বলা মুশকিল। তবে আমরা বিলুপ্ত প্রায় মাছের মধ্য থেকে বেশ কিছু মাছ ফিরিয়ে এনেছি। এগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য মাছ চাষীদের দেওয়া হয়েছে। সফলতাও এসেছে। আমরা হারিয়ে যাওয়া সকল প্রজাতি ফিরিয়ে আনতে পারবো। গবেষণা ছাড়া এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। তবে তিনি মনে করেন এ নিয়েও দেশে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। সেই সাথে এখন সময় এসছে দেশীয় প্রজাতীয় বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ বৃদ্ধি করার।

মৎস্য অধিদফতরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মিজানুর রহমান বলেন, হাইব্রিড বলতে বুঝায় দুটি ডিফারেন্ট প্রজাতির মধ্যে ক্রস বা ব্রিডিং করা। আমাদের দেশে এধরণের মাছের সংখ্যা খুবই কম। এটা করা হলে গ্রথসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।এক সময়ে এটা বাংলাদেশে হলেও এখন আর এগুলো নেই। হ্যাচারি আইনের মাধ্যমে যারা এসব কাজ করতো তাদের হ্যাচারি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ক্রস মাছ আর কেই করেনা।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে কিছু বিদেশী মাছ রয়েছে এগুলো রুই কাতলা,কালিবাউস প্রজাতির মাছ অন্য মাছ খায় না। রাক্ষুসে মাছ চিতল, বোয়াল, শোল পাঙ্গাস, মাগুর, গজার এরা মাছ খেয়ে ফেলে। তবে এরা আমাদের পরিবেশের জন্য সহায়ক। চাষের পুকুরে রাক্ষুসে মাছ থাকে না।

তিনি বলেন, নির্দিষ্ট মাছ ছাড়া চাষাবাদ করা হয় না। একারণে দেশীয় প্রজাতি নষ্ট বা বিলুপ্ত হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন না। তার মতে মুক্ত জলাশয়ের মাছের বিষয়ে আমাদের ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, বিদেশী মাত্র ২৪ প্রজাতির হাইব্রিড মাছ চাষের ব্যাপকতায় দেশি ২৬০-২৭০ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হুমকিতে পড়েছে। একদিন হয়তো দেখা যাবে দেশীয় প্রজাতির ধানের মতোই সব জাতের মাছ হারিয়ে যাবে। তার স্থলে জায়গা করে নেবে জেনেটিক গবেষণায় উদ্ভাবিত অধিক উৎপাদনশীল জাতের মাছ।

হাইব্রিড ও দ্রুত বর্ধনশীল মাছের দেশের খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর-ডোবা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশিয় প্রজাতির মাছ। প্রাকৃতিক উৎসে জন্মানো কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, চাপিলা, টাকি, রুই, কাতলা, মৃগেল, চিতল, রিটা, পাঙ্গাশ, বোয়াল, খৈলসার মতো সুস্বাদু দেশী মাছগুলো এখন আর দেখা যায় না বললেই চলে। যদিও বা কালে ভদ্রে কিছু দেখা গেলেও দাম আকাশ ছোঁয়া। দেশীয় প্রজাতির মাছের মধ্যে থেকে ২০-২২ বছরের ব্যবধানে ৬৫ প্রজাতির মাছ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

মৎস্যজীবিরা জানিয়েছেন, অধিক মুনাফার আশায় হাইব্রিড বা বিদেশী মাছের চাষ করতে গিয়ে জলাশয়গুলো থেকে দেশী মাছের বিলুপ্তি ঘটানো হয়েছে।পুকুর প্রস্তুতির সময়েই সেরে ফেলা হচ্ছে দেশি প্রজাতির সব মাছ।
দেশি মাছের অভাব তীব্রতর হচ্ছে। দেশি প্রজাতির মাছ মানুষের দেহের পুষ্টি যোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক সময় আমাদের মৎস্য বিজ্ঞানীরা দেশিয় প্রজাতির মাছকে অবহেলায় রেখে দেশে বিদেশী জাতের মাছের চাষ বাড়াতে উৎসাহী হয়ে পড়েন। দেশি মাছ নিয়ে গবেষণা উপেক্ষিতই থেকে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে দিয়ে দেখা গেছে, কম সময়, অধিক লাভের কারণে অধিক উৎপাদনশীল মাছের দিকে ঝুঁকছেন সবাই।কিন্তু মাছ বিক্রির সময়ে যদি কোনো দেশি মাছ পেয়ে যান সেটি কিন্তু তিনি বিক্রি না করে নিজের জন্য রেখে দেন। নিজেরা খাওয়ার জন্য।তবে ধীরে ধরে অনেক চাষি দেশিয় মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

আগামীনিউজ/তরিকুল/এমআর

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner