1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি
৫-৬ ঘণ্টা দাঁড়াতে হচ্ছে লাইনে

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন যন্ত্রণার আর এক নাম 

মনির হোসেন, বেনাপোল থেকে প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২, ০৬:৩৫ পিএম পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন যন্ত্রণার আর এক নাম 

দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল। পরিকাঠামো নির্মাণে এখানে খরচ করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গড়ে উঠেছে আধুনিক টার্মিনাল। কিন্তু পরিষেবা সেই তিমিরেই। এই সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে বৈধভাবে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

অভিযোগ

বাংলাদেশের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে একজন যাত্রীর পাসপোর্ট খতিয়ে দেখার কাজ সারতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট। কিন্তু এপারে পেট্রাপোলে সেই কাজের জন্য ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। রোগী হোক কিংবা কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা বয়স্ক মানুষ, রেহাই মিলছে না কারও। নেই জল-খাবার।

এদিকে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হওয়ায় রোদে পুড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ভিজতে হচ্ছে বৃষ্টিতে। শৌচাগারে যাওয়ারও কোনও সুযোগ নেই। কারণ, লাইন হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা। সবমিলিয়ে এক দুর্বিসহ যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে যাত্রীদের। যেসব ভারতীয় বাংলাদেশে আসছেন, তাদের ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশনে তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ভোগান্তি হলেও, বাংলাদেশের যাত্রীদেরকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, প্রতিদিনের চিত্র। ফলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারত-বাংলাদেশের যাতায়াতকারী যাত্রীরা। যদিও এনিয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এছাড়াও পেট্রাপোল কাস্টমস তল্লাশি কেন্দ্রে জোর পূর্বক টাকা রেখে দেয়া হচ্ছে। যাত্রীরা ব্যাগ নিয়ে আসা-যাওয়ার পথে কাস্টমসের অফিসার ও সিপাইরা বাক্স খুলে বসেছে। টিনের বাক্সে টাকা না দিলে পার হওয়া কস্টকর। ব্যাগের ওজন বেশি হলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা না দেওয়া পর্যন্ত পারাপারের কোন সুযোগ নেই।

যাত্রীদের বক্তব্য

পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে দীর্ঘ সময় নষ্ট হওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে চরম নাকাল হতে হচ্ছে তাদের। ট্রেন-বাস পাচ্ছেন না। ফলে দিনের দিন কলকাতায় পৌঁছাতে না পেরে কাজের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তাদের। চিকিৎসকের অ্যাপয়নমেন্ট বাতিল হয়ে যাচ্ছে। বাতিল হয়ে যাচ্ছে বিমানের টিকিটও। রাত হয়ে যাওয়ায় পেট্রাপোল সীমান্তেই বা বনগাঁ শহরে হোটেল ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে।

পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়া যাত্রীদের বক্তব্য, যারা ট্রেনে বা বিমানে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসছেন, তাদের তো এই ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। তা হলে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে গেলে কেন তাদের এই ভোগান্তির শিকার হতে হবে ?

গোটা বিষয়টি নিয়ে পেট্রাপোল এক্সপোর্টার ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়কারী কেন্দ্রগুলির কর্মীরাও যার পরনাই ক্ষুব্ধ। তাদের বক্তব্য, এভাবে চলতে থাকলে যাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকবে। এমনিতেই অনেকে এখন ট্রেনে বা বিমানে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসেন। পেট্রাপোল দিয়ে এলে কলকাতায় পৌঁছনো সুবিধা, সেকারণেই যাত্রীরা এই সীমান্ত ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এভাবে যদি তাদের হেনস্তার শিকার হতে হয়, তা হলে বাধ্য হয়ে তারা বিকল্প পথে আসবেন। এতে পেট্রাপোল সীমান্তের গুরুত্ব কমবে। যাত্রী সংখ্যা কমে গেলে এই সীমান্তের উপর যে সব ব্যবসায়ী নির্ভরশীল, তারাও পথে বসতে বাধ্য হবেন। বিষয়টি নিয়ে বারবার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

বাংলাদেশের যাত্রীদের বক্তব্য

চিকিৎসা, পড়াশোনা, ব্যবসা কিংবা বেড়ানোর জন্য প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ ভারতে যান। যারা সড়কপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে চান, তাদের কাছে প্রথম পছন্দ বেনাপোল-পেট্রাপোল। কারণ এখান থেকে কলকাতায় পৌঁছনো তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু যেভাবে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে, তাতে বিরক্তি চুড়ান্ত পর্যায়ে। ভারতের ইমিগ্রেশনে ধীরগতিতে কাজ চলায় যাত্রীরা নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ইমিগ্রেশনে ডেস্কের সংখ্যা বেশি থাকলেও মাত্র তিন-চারটি খোলা থাকে। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা খোশগল্পে মেতে থাকেন। পাসপোর্ট নিয়ে মোবাইলে কথা বলেন ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় ইমিগ্রেশন কর্মীদের। যাত্রীরা ভোর ছ’টায় ইমিগ্রেশনে লাইন দিয়ে বিকেলে এমনকী রাত এগারোটা বেজে যাচ্ছে চেকপোস্ট পার হতে। এত রাতে সীমান্ত পার হওযায় নিরাপত্তার ঝুঁকিও বাড়ছে।  
বেনাপোলের সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান জানান, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে দীর্ঘ সময় তো লাগছেই, তার উপর  রয়েছে কুলি ও দালালদের দাপট। যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সিরিয়াল ভেঙে লাইনে আগে ঢুকিয়ে দেয়ার টোপ দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁডানোর হাত থেকে নিস্তার পেতে অনেকে দালালদের টাকা দেন। কিন্তু আদৌও তারা কোনও কাজ না করে দিয়ে বেপাত্তা হয়ে যায়। এসব নিয়ে বলতে গেলে বিএসএফের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়।

ভারতে চিকিৎসা করিয়ে বাংলাদেশে ফেরা খুলনার শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, সকাল ৯টায় আমরা পেট্রাপোল সীমান্তে আসি। কিন্তু মোটেই কাঙ্খিত পরিষেবা মেলেনি সেখানে। নোম্যান্সল্যান্ডে আমাদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। একটি পরিবহণের কর্মীরা আগে আগে ইমিগ্রেশনের কাজ করে দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নেন। কিন্তু কিছুই করেননি। শুধুমাত্র আমাদের সঙ্গে যে ব্যাগপত্র ছিল, সেগুলো কিছুটা পথ বহন করে দিয়েছেন এটুকুই। অন্যদিকে, কাস্টমস এ টাকা নেওয়া ও বিএসএফের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়েছে।

পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরা ঢাকার অরুণ পাল বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিয়ে সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে ভারতে যাচ্ছি। তাহলে আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হবে কেন ? ওই যাত্রীর অভিযোগ, পেট্রাপোল সীমান্তে ইমিগ্রেশনে কর্মীর সংখ্যা কম, ইন্টারনেট সমস্যা এসব তো আছেই। তার সঙ্গে প্রশাসনের মারমুখী আচরণ। মনে হচ্ছে যেন, পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে ভারতে এসে আমরা কোনও অন্যায় করে ফেলেছি বলে মনে হচ্ছে। দিনভর না খেয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। এটা অমানবিক ছাড়া কী হতে পারে। পরিষেবা দেওয়ার নামে চেকপোস্টে আমাদের চরম হয়রানি হতে হয়েছে। বাংলাদেশের বেনাপোলে আসার পর বাসের টিকিটও পাওয়া যায় না।

শুধু একজন, দু’জন নয়, পেট্রাপোল দিয়ে যাতায়াত করা কমবেশি সব যাত্রীরই একই অভিজ্ঞতা। বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ঢাকায় ফেরা মফিজুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ভোর পাঁচটার সময় পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে লাইনে দাঁড়াই। বিকেল চারটায় বাংলাদেশে এসেছি। কিন্তু বেনাপোল ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টের কাজ করতে সময় লেগেছে মাত্র দশ মিনিট। তার সঙ্গে বাংলাদেশে আসা এক যাত্রী জানান, আগেরদিন রাত দশটা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বনগাঁয় ফিরে গেছি। পরদিন আবার এসে লাইনে দাঁড়াই। তার পর বাংলাদেশে আসতে পেরেছি। তা হলে ভাবুন, কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

ওপারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ১৪টি ডেস্ক রয়েছে। অথচ কাজ হয় মাত্র তিন-চারটি ডেস্কে। জানতে চাইলে বলা হয়, কর্মীর সংখ্যা কম। ফলে সব ডেস্ক খোলা সম্ভব হচ্ছে না। এরই জেরে যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এক-একজনকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে কম করে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। যদিও যাত্রীদের উন্নত পরিষেবা দিতে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ১৬ টি ডেস্ক চালু করা হয়েছে। সেখানে গোটা প্রক্রিয়া সারতে খুব বেশি হলে সময় লাগছে ১৫ মিনিট। স্বাভাবিকভাবে বেনাপোলের পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কোনও অভিযোগ নেই। তাদের যত ক্ষোভ পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন নিয়ে। ভারতের ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা পঞ্চায়েতের শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সঞ্চালক পরিতোষ বিশ্বাস বললেন, ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতকারী যাত্রীদের পেট্রাপোল সীমান্তে যে কীভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, চোখে না দেখলে তা বিশ্বাস করা কঠিন। ধরা যাক, লাইনে ৫০০ জন দাঁড়িয়ে আছে। খুব বেশি হলে ৫০ জন ইমিগ্রেশন বিল্ডিংয়ের ভিতরে। বাকি ৪৫০ জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে নোম্যান্সল্যান্ডে খোলা আকাশের নিচে। যাত্রীদের জন্য কোনও কম্পোর্ট জোন নেই। তারা লাইনে থাকা অবস্থায় জল, খাবার পান না। শৌচাগারে যাওয়ারও কোনও সুযোগ নেই। ইমিগ্রেশনে ১৪ টির বেশি কাউন্টার থাকলেও খোলা থাকে মাত্র দু-চারটে। সকাল দশটায় লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্ট পরীক্ষা হতে বিকেল চারটে বেজে যায়। কিছুদিন আগে আমিও বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। আমাকেও পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে তিন ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যাত্রীর স্বাচ্ছন্দ্য বলে সেখানে কিছু নেই। দু-তিনটে কাউন্টার খোলা। অথচ মাঝেমধ্যেই কোনও কাউন্টার থেকে অফিসার উঠে চলে যাচ্ছেন। ১৫ মিনিট, ২০ মিনিট পর তিনি ফিরছেন। কারও কিছু বলার নেই। গত ঈদের সময় পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে দিনে সাত-আট হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছে। এবার সেই সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যারা যাতায়াত করছেন তারা নিরুপায় হয়ে।

পেট্রাপোল এক্সপোর্টার অ্যান্ড ইমপোর্টার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্টে যাতায়াত করা যাত্রীদের যে কী চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তা বলার ভাষা নেই। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ম্যান পাওয়ার কম। ফলে কম কর্মী, আধিকারিক দিয়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রীকে পরিষেবা দিতে গিয়ে কার্যত নাকানি চোবানি খেতে হচ্ছে। শুধুমাত্র পাসপোর্ট চেক করতে ৫-৬ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, এটা ভাবা যায় ?

তিনি বলেন, একে তো ম্যান পাওয়ার কম, তার উপর প্রায় দিন সার্ভারের সমস্যা। ফলে কাজ বন্ধ। খুবই খারাপ লাগে যখন দেখি, কোনও শিশু কোলে মহিলা বা বয়স্ক নাগরিক রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কারও জন্য কোনও ছাড় নেই। যাত্রীরা যখন ইমিগ্রেশনের লাইনে ঢোকার জন্য নোম্যান্স ল্যান্ডে অপেক্ষা করেন তখন সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়। কারণ, তখন কারও শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন হলে কিছুই করার থাকে না। তারা না পারেন ভারতে ঢুকতে আবার না পারেন বাংলাদেশে যেতে। এই সমস্যার একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।

পেট্রাপোল স্টাফ অ্যান্ড ক্লিয়ারিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করে গেলেন। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী ও সম্পর্ক আরও মজবুত করার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করা বাংলাদেশের যাত্রীদের অভিজ্ঞতা মোটেই ভাল নয়। প্রকাশ্যেই তারা তা বলছেন।

তিনি বলেন, আপেক্ষিকভাবে মনে হতে পারে, বিষয়টি ছোট। কিন্তু অবশ্যই এ বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। না হলে ভারতের পরিষেবা সম্পর্কে একটা খারাপ বার্তা যাবে। পেট্রাপোলে আধুনিক পাসেজ্ঞার টার্মিনাল হয়েছে। তার পরও পরিষেবার এতটুকু উন্নতি হবে না কেন? কেন একজন যাত্রীকে লাইনে ৫-৬ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এর দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে অনেকে দালাল ধরে সাইড লাইনে অর্থাৎ বিনা পাসপোর্টে ভারতে আসার চেষ্টা করছে।

সম্প্রতি পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন বনগাঁর মতিগঞ্জের তরুণ সিংহ। তার অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। তিনি বললেন, এখন পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে বাসে ৫ ঘণ্টাতেই বেনাপোলে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে সময় লাগছে ৬ ঘণ্টারও বেশি। তবে সেসব অভিযোগকে ছাপিয়ে গিয়েছে নোম্যান্সল্যান্ডের দুর্ভোগ। বললেন, আমি সকাল সাড়ে ১১ টায় নোম্যান্সল্যান্ডে পৌঁছাই। আর পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন থেকে যখন বের হয়েছি, তখন সন্ধ্যা ছ’টা। সাথে আমার স্ত্রী ছিলেন। তাকেও একইভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ৫০ জন করে ইমিগ্রেশনের লাইনে ঢোকানো হচ্ছে। তার পর বাংলাদেশ থেকে আসা ভারত-বাংলাদেশ সব যাত্রীর জন্য একটাই লাইন। নোম্যান্স ল্যান্ডে অপেক্ষা করার সময় জল, খাবার কিছুই নেই।

এ ব্যাপারে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, পেট্রাপোল বন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ ওপাশের ব্যাপার। তবে আমাদের বেনাপোল বন্দরে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করছে। আমাদের এখানে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। অথচ পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ধীর গতির কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রীদের খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা তাদের অনেকবার বলেছি। কিন্তুু তারা আমাদের কোন কথাই শুনচ্ছে না। প্রতিদিন ভারত ফেরত যাত্রীদের অভিযোগ শুনতে শুনতে নিজেরও খারাপ লাগে।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner