ঢাকাঃ বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকটা সময় কাটলেও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য জানতে মূলধারার গণমাধ্যমের উপরই নির্ভর করেন অনেক তরুন।
ঘটনা দ্রুত জানাজানির এমন ধরনের কারণে এখন অনেক তরুণের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে ফেইসবুক, ইউটিউব, টুইটারের মতো জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়াগুলো। ব্যক্তিগত যোগাযোগ আর বন্ধুদের সঙ্গে সেরা মুহূর্ত শেয়ারের ‘ট্রেন্ডের’ কারণে প্রায় সব বয়সীদের অবসরের বড় অংশ যাচ্ছে ফেইসবুকে। দেশ-বিদেশের বড় ঘটনার পাশাপাশি নিজের আশেপাশে যা ঘটছে, সেটিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানাও যায় আগেভাগে।
“কেউ ফেইসবুক লাইভে আসলে সেটা মুহূর্তের মধ্যে সবার কাছে পৌঁছে যায়। সেখানে পাঠক বা দর্শক নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মাহীর ধারণা, তরুণদের মতো গণমাধ্যমও কিছুটা হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফলে সংবাদ প্রদানের ধারাও বদলে যাচ্ছে।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিউজ শেয়ার না করলে তেমন ভিউয়ার পাওয়া যায় না। বিজ্ঞাপনের আধিক্যের কারণে মানুষ টেলিভিশন খুলে সংবাদ দেখে না। তাই ইউটিউব বা ফেইসবুকে সেই সংবাদ পোস্ট না করলে সেগুলো তেমন দর্শক পায় না।”
দুই মাধ্যমেই গুজবের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিকতার একজন শিক্ষক।
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ইচ্ছাকৃতভাবেও ছড়ানো হয়। কারণ অনেকের উদ্দেশ্যই থাকে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। গণমাধ্যমেও গুজব দেখি। কারণ সঠিক তথ্যটা যখন তারা পায় না, তখন বিভিন্ন সোর্স থেকে এনে তথ্যটা দেয়; যেটা অনেক সময় সত্য হয় না। তবে সেটা তুলনামূলকভাবে কম।”
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে মিথ্যা, গুজব, বিদ্বেষ, ধর্মীয় উসকানি থেকে মুক্ত রাখতে সেখানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন রয়েছে।
“স্বাধীনতার সাথে সাথে দায়িত্বের প্রশ্নটিও আসে। একেবারে নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই, স্বাধীনতারও একটা নিয়ম থাকে।”
আর গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশনে বাধার সম্মুখীন হলে সেটিও তাদের প্রকাশ করা উচিৎ বরলে মত জানান তিনি।
“সেটি প্রকাশ করলেই পাঠক বুঝতে পারবে, কেন তারা সংবাদটি প্রকাশ করতে পারে নাই। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে, যদি সম্পাদক, প্রকাশক এবং সাংবাদিকদের মধ্যে সত্যনিষ্ঠতা থাকে। তাহলে কোনো বাধাই তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। যদি নিজেরাই বস্তুনিষ্ঠতায় কখনো আপস করে, তাহলে মুশকিল হয়ে যাবে।”