ঢাকাঃ একটু বড় পোস্ট লিখতেই হলো; কষ্ট কইরা পইড়েন! সওয়াবের গ্যারান্টি না দিতে পারলেও, অন্ততপক্ষে গোনাহগার হইবেন না, এইটা নিশ্চিত। মাথার স্ক্রু গুলা ঢিলা থাকলে কিংবা তাঁরগুলা displace থাকলে জোড়া লাগবে, এতে কোন সন্দেহ নাই। কথাগুলো বেদাতী ভাইদের উদ্দেশ্যে উৎস্বর্গকৃত!
এত ওয়াজ, এত মাহফিল, এত কথা কিন্তু ধর্মের যে সহজ কথাগুলো আছে সেগুলো কেউ বলতে চায়না। শুধু দানের বয়ান আর দান করলেই জান্নাতে যাবার শর্টকাট পথ বলে দেয়া। দান গ্রহণের সত্যিকারার্থে হক্কদার কারা ? এ বিষয়ে কতোক নিয়ম-পদ্ধতি রয়েছে, যা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে সু-স্পষ্ট বিদ্যমান। মসজিদের সামনে, মাদ্রাসার সামনে, এতিমখানার সামনে, ওয়াজের প্যান্ডেলের সামনে মাদ্রাসার অনাথ ছাত্রদের মাইকের উচ্চ আওয়াজে সুরেলা কণ্ঠে শুধু দান করেন, দান করেন....
"দানকারীদের মাতা-পিতা সুখে রাইখো কবরে,
নূরের টুপি পড়াইয়া উঠাইও কাল হাশরে!"
আচ্ছা আপনারাই বলেন, হাশরের মাঠে বিচার দিবসে কারো শরীরে কোন কাপড় থাকবে? কারো দিকে কারো তাকানোর কোন হুঁশ থাকবে? মানুষ শুধুমাত্র ইয়া নাফসী, ইয়া নাফসী বলবে, তাইতো ! যেখানে কারো শরীরে কোন কাপড়ই থাকবে না, সেখানে দানকারীর মাথায় যদি একটা টুপি পড়াইয়া দেয় তাও আবার নূরের টুপি! তাহলে দেখতে কেমন অশোভন দেখাবে? গায়ে কাপড় নাই, অথচ মাথায় টুপি? টুপি না পড়াইয়া যদি কাপড় দিয়া ইজ্জত বাঁচানোর ব্যবস্থাটুকু করতো, তাইলেও কিছুটা হইতো! এ ধরনের মনগড়া ভ্রান্ত ওয়াজ সহজ সরল ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে কোন প্রশ্ন জাগে না!
আবার দেখেন একবার সুবহানাল্লাহ্ বললে আসমান-জমীনের মাঝখানের সকল জায়গা নেকীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে তাহলে দ্বিতীয় আরেকবার সুবহানাল্লাহ্ বললে নেকী রাখার মতো জায়গা আসমান-জমীনে আর অবশিষ্ট থাকে ?? এগুলো সিম্পলি মানুষকে জান্নাতের লোভী বানানোর মসলা ছাড়া আর কিছুই নয়! আর জানেন তো লোভে পাপ, আর পাপে মৃত্যু!
আল্লাহ্ পাওয়া আর বেহেশতে যাওয়া, ভাবছো কি মন এতো সোজা ?? গতানুগতিক নামাজ আর তসবিহ টিপেই যদি জান্নাতে যাওয়া যেতো তাহলে আল্লাহ্কে রাজি-খুশি রাখা আর সন্তুষ্টি লাভের ইবাদত কোনগুলো???
ফেইসবুকের দেয়াল ভরে থাকে ধর্মের কথায় । কিন্তু কোথায় যেন ধর্মের সহজ কথাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে ।
এক পক্ষ ধর্ম নিয়ে এমন গোড়ামী কথাবার্তা লিখে মনে হয় সবাই বুঝি জাহান্নামে যেতে বাধ্য আমরা সবাই। So called মোল্লারাই বুঝি জান্নাত-জাহান্নামের sole agent. তাদের মত মানলেই জান্নাত; আর না মানলে তো বোঝেনই express way বরাবর "সোজা জাহান্নাম"
সোজা কথা এখন যে সময় যাচ্ছে যে যেভাবে পারছে আরেকজনকে দোজখের অধিবাসী বানিয়ে শান্তি পাচ্ছে । হালাল হারামের পার্থক্য করতে গিয়েও এমন কথা বলছে যাতে নিজেদের স্বার্থ লুকায়িত !
মানুষ অনেক কিছুই সহজভাবে সম্পাদন করতে পারলেও নিজের ভেতরে রিপুকে দমন করাটা অতো সহজেই পেরে ওঠেনা; এ যে বড় কঠিন সাধনা। মনের ভেতরের সকল কামনা-বাসনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে, নিজের ইহকালীন-পরকালীন সকল ইচ্ছেকে মহান রবের উপর সোপর্দ রেখে, নিজ চরিত্র নামক অমূল্য কেতাবখানাকে পবিত্র করে, সরল কথাগুলো সরল ভাবে পৌছানোর লোকই এখন সবচেয়ে বড় অভাব!
মানুষের মন যতক্ষণ না পর্যন্ত শয়তানমুক্ত হবে, ততোক্ষন পর্যন্ত ওই এক আল্লাহ্'র নৈকট্য অর্জন ততোটাই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়বে। মহান সুবহানু তায়ালার ঐকান্তিক মনের বাসনায় মানুষ হয়ে দুনিয়াতে আসার সত্যিকারের উদ্দেশ্যে অনুধাবন করতে হবে তা না হলে ভোগবিলাসে মত্ত থাকা মানুষ কস্মিনকালেও তার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারবে না।
শাহ্ মোঃ মাকসুদুল হক (সেলিম শাহ্)