ঢাকাঃ পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়েছে। শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে পুরান ঢাকা লালবাগের হোসেনি দালান থেকে এই মিছিলটি শুরু হয়।
মিছিলটি বকশীবাজার, নিউ মার্কেট হয়ে ধানমন্ডি লেকের পার্শ্ববর্তী সীমান্ত স্কয়ারের সামনে শেষ হবে।
শিয়া সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য রয়েছে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জানা গেছে, এই দিনে কারবালা প্রান্তরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেনের (রা.) শাহাদতের শোককে ধারণ করে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা এই তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে থাকেন।
মিছিলে অংশ নেওয়া রায়হান মিয়া বলেন, এ মিছিল মূলত শোক মিছিল। প্রতিবছরই আমি মিছিলটিতে অংশগ্রহণ করি। এতে করে নিজের মধ্যে একটা ধর্মীয় চেতনা জাগ্রত হয়।
মাহমুদুল হাসান নামক আরেক ব্যক্তি বলেন, শত শত বছর ধরে ইমাম হোসেন (রা.) শহীদ হওয়ার দিনটিকে ঘিরে তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। তাজিয়া তৈরি করা হয় ইমাম হোসেনের (রা.) সমাধির আদলে। তাজিয়া মিছিলে ভক্তরা শোকের গান গাইতে গাইতে বুক চাপড়ে হায় হোসেন, হায় হোসেন বলে বিলাপ করে।
এর আগে সকাল ৯টা থেকেই পুরান ঢাকার ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা হোসেনি দালানে জড়ো হতে থাকেন। তাজিয়া মিছিলে শিশু-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী-পুরুষরা অংশ নিয়েছে। হোসেনি দালান ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাজিয়া মিছিল ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার লালবাগের হোসেনি দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া ও এর আশপাশের শিয়া সম্প্রদায় কেন্দ্রিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া (শোক) মিছিল ঘিরে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। কাউকে ব্যাগ বা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ওই এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তা জোরদারে কাজ করছে সোয়াটসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন ইউনিট।
দিবসটি নির্বিঘ্নে পালনে ডিএমপির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশুরায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর সবচেয়ে পুরোনো ইমামবাড়া পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জের বিবিকা রওজা। এটি ১৬শ সালে নির্মিত হয়। মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) এর কন্যা ও ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলীর বিবি মা ফাতেমা (রা.) এর নামে নির্মিত এ রওজা। প্রতি বছর মহররমের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সময়ে আশুরা উপলক্ষ্যে জমজমাট হয়ে ওঠে বিবিকা রওজা।
বুইউ