ঢাকাঃ নৌবাহিনীর কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হাজী সেলিমপুত্র ইরফান সেলিমকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০নং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আ ন ম ফয়জুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ধারা ১২ এর উপ-ধারা (১) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩০নং সাধারণ ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর পদ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।
ইরফান সেলিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তিনি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও নোয়াখালীর সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর জামাতা।
এর আগে আজ মঙ্গলবার (২৭অক্টোম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইরফান সেলিমের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, যে কাউন্সিলরের কথা বলা হচ্ছে, সেই অভিযোগটি আমাদের নথিভুক্ত হয়েছে। আমরা প্রসেস করছি। সম্ভবত আইন অনুযায়ী তাকে আজকেই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করব। বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনও জারি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, তাকে বরখাস্ত করার পর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে। ডিএসসিসি কাউন্সিলর ইরফানের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত আমলে নেয়া হবে বলেও জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৫অক্টোম্বর) রাতে ধানমন্ডিতে এমপি হাজী মো. সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে তার স্ত্রীর সামনে মারধর করা হয়। ওইদিন রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও সোমবার ভোরে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।গতকাল সোমবার (২৬অক্টোম্বর) দুপুরে ইরফানকে গ্রেফতার করে র্যাব। পুরান ঢাকার তার বাসায় অভিযানও পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৩৮টি ওয়াকিটকি, পাঁচটি ভিপিএস সেট, গুলিসহ একটি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক, একটি ব্রিফকেস, একটি হ্যান্ডকাফ, একটি ড্রোন এবং সাত বোতল বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করা হয়।
বাসায় বিদেশি মদ ও অনুমোদনহীন ওয়াকিটকি রাখায় কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে এক বছর করে জেল দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। রাতেই তাদের কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। পরে ইরফান সেলিমকে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।
এদিকে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় ইরফান সেলিমকে সাতদিনের রিমান্ডে চাইবে পুলিশ। মঙ্গলবার এ তথ্য জানান ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া।
আগামীনিউজ/জেহিন