ঢাকাঃ স্বাধীনতার ৪৯বছরেও বাংলাদেশে সার্বজনিন-কল্যাণমুখি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণিত হয় নাই। বরং শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ১৯৬২ সালের এ দিনটিকে স্মরণ করে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্যকর অবস্থার বিরুদ্ধে দেশেপ্রেমিক জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ও সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা দিবস উপলক্ষে হাইকোর্ট মোড়ে শিক্ষা চত্বরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ'র পক্ষ থেকে ১৯৬২'র শিক্ষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, "ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস সৃষ্টির গোড়াপত্তনের ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর একটি অনন্য দিন। এ দিনের আত্মদানে গৌরবোজ্জ্বল দিনটি বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। শিক্ষার দাবিতে এমন রক্তক্ষয়ী এবং আন্দোলন এ দেশে আর কখনও হয়নি।"
ন্যাপ মহাসচিব আরো বলেন, "শিক্ষা দেশের নাগরিকদেও একটি মৌলিক অধিকার। গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। স্বাধীনতার পর থেকে নানা উন্নতি হলেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে এখনো আমরা পৌঁছতে পারি নাই। শিক্ষাখাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা এবং সর্ব”চ শিক্ষা পর্যন্ত ফ্রি করা উচিত, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন ও সেইসঙ্গে প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।"
তিনি বলেন, "১৯৬২’র শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬’র হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী ও ছয় দফার আন্দোলন, ১৯৬৯-এর নুর খান শিক্ষা কমিশন ও গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনায় গভীর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে এ শিক্ষানীতির প্রতিবাদ ও আন্দোলনগুলো। সেদিন বাংলার ছাত্রসমাজই পালন করেছিল নতুন ইতিহাস নির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা।"
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন : বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলু ও জাতীয় জনতা ফোরাম সভাপতি মোহাম্দ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর স্বৈরশাসক আইয়ুব খান গঠিত শিক্ষা কমিশনের শিক্ষা নীতি তথা শিক্ষা সংকোচন নীতির প্রতিবাদে তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়। ছাত্রদের ডাকা হরতালে পুশিলের দফায় দফায় লাঠিচার্জ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে শহীদ হন গোলাম মোস্তফা, বাবুল ও ওয়াজিউল্লাহ। সেই থেকে ছাত্রসমাজ দিনটিকে সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
আগামীনিউজ/মিথুন