ঢাকাঃ বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ৯৯তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন।
তাজউদ্দীন আহমদ আজীবন সংগ্রামী রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মহানায়ক। ছাত্রজীবন থেকেই তাজউদ্দীন আহমদ রাজনীতি করতেন। ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার পরের বছরই ১৯৪৪ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হোন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দীন।
পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এ সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন, পরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হোন। তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তাজউদ্দীন আহমদ। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেও পরে তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন।
১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনের সময় গ্রেফতার হোন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এলএলবি পাস করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন। ১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হোন তিনি।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে যান এবং প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন তাজউদ্দীন। ৪ এপ্রিল দিল্লিতে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করেন। ১০ এপ্রিল তিনি আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তার অবদান ছিল অসামান্য।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু খুন হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় আরও তিন নেতা আবুল হাসনাত মোহাম্মদ (এএইচ) কামরুজ্জামান, এম মনসুর আলী ও সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাজউদ্দীনকেও হত্যা করা হয়।
তাজউদ্দিন আহমদের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বঙ্গতাজ স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা আজ বেলা সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ‘তারুণ্যের প্রেরণায় বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ : বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে বঙ্গতাজ স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা-বিটিএসএস’র উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তাজউদ্দীন আহমদের একমাত্র ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।
বুইউ