ঢাকাঃ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে
মিয়ানমারে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমাদ খান।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন শেষে শুক্রবার (৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
আইসিসি প্রধান বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নির্যাতন-নিপীড়নের যে ঘটনা ঘটেছে, এর তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে কাজ করছে আইসিসি। ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমি বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি। সেখানে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সমস্যার কথা শুনেছি।
করিম আসাদ আহমাদ খান বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের বিষয় নয়, এটি সারা বিশ্বের জন্যই উদ্বেগের। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। সেখানে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। গত মার্চ মাস থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তা কমেছে রোহিঙ্গাদের। জনপ্রতি একজন রোহিঙ্গা দিনে নয় টাকা করে সহায়তা পাচ্ছেন। এখন একটি ডিমের দাম ১২ টাকা। তাহলে এ অর্থ দিয়ে তারা কীভাবে খাদ্য চাহিদা মেটাবে? এটা একটি মানবিক সমস্যা। এখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর দেওয়া প্রয়োজন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে সবার সহযোগিতা দরকার। তাই, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলবো রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছি। তিনি বলেছেন- ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। সে কারণে মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এ ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের অবশ্যই প্রশংসা পাওয়া উচিত।
রোহিঙ্গা শিশুদের রাখাইন ভাষায় শিক্ষাদান করা হচ্ছে। তবে, তারা কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারবে, সেটা অনিশ্চিত। তাই এসব শিশুদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।
বাংলাদেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষা নিশ্চিত করা উচিত কি না জানতে চাইলে আইসিসি প্রধান কৌঁসুলি বলেন, আমি কোনো ডোনার এজেন্সি নই। তাদের শিক্ষাদানের পদ্ধতি নিয়ে আমি কথা বলতে পারি না। আমি এখানে এসেছি তাদের ওপর নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করতে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্পের উদ্যোগকে কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি নই। তাই এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।
রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার শেষ হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিচার নিয়ে চূড়ান্ত তারিখ বলা সম্ভব নয়। আমরা রোহিঙ্গা নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এ বিচারে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এমআইসি